বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আরও মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে: অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল
প্রকাশ: সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৪৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
‘মুজিববর্ষ’ ও করোনা মহামারির মধ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনন্য মুহূর্ত এসেছে। আমরা স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নির্মম মৃত্যুর করতলে প্রাণ দিয়ে আজো যারা দিশারি তাঁদের অবদানকে। বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে ঘটে এক মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ। তারা বেছে বেছে অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের হত্যা করে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৮৮ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, ব্রুনাই বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা, অস্ট্রেলিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি এবং সাবেক ছাত্রনেতা ড. নূর রহমান, এফবিসিসিআই এর পরিচালক (শহীদ পরিবারের সন্তান) শমী কায়সার। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ১৯৭১ আজকের এই দিনটির ঠিক দুই দিন পরে যখন আমরা বিজয় অর্জন করবো ঠিক তখনি আমাদের এই আনন্দঘন মুহূর্তকে চিরতরে কালো ছায়া এঁকে দিয়ে গেছে। এবং এটি কিন্তু হঠাৎ কোন সংঘর্ষ ছিলনা। আমরা জানি যে, কোন যুদ্ধে যখন কোন বাহিনী পরাজিত হতে থাকে তখন তারা সেই দেশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পাকিস্তানের ২৪ বছরে এদেশে অবকাঠামো তৈরি হয়নি বললেই চলে। আর যা কিছুও বা উত্তরাধিকার সূত্রে এদেশে গড়ে উঠেছিল ঔপনিবেশিক শাসকদের কাছ থেকে পেয়েছিলাম। সেটিও ধ্বংস করে দিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানিরা মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে। এরপরে তারা দেশে আরও দুটি জঘন্য কাজ করেছিল। এইরকম ঘটনা অন্য কোন দেশের যুদ্ধের সময় হয়েছি কিনা আমার জানা নেই। তারা একটি সংকর জাতি তৈরি করতে চেয়েছিল। পাকিস্তান সেনারা বাঙালি মহিলাদেরকে ব্যাপক ভাবে ধর্ষণের অনুমতি দিয়ে এইদেশে একটি সংকর জাতি গড়ে দিতে চেয়েছিল যাতে বাঙ্গালিরা দেশের স্বাধীন অস্তিত্ব ধরে রাখতে না পারে। ২য় যে কাজটি করা হয়েছিল, সেটা হলো আমাদেরকে মেধা শূন্য করার জন্য বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের রাতের আঁধারে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যেয়ে রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে পৈশাচিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছিল। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্যই ছিল বাংলাদেশকে মেধা শূন্য করে দেয়া। অবকাঠামো আর অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায় কয়েক বছরে কিন্তু মেধার ঘাটতি পূরণ হয় না কয়েক যুগেও। এর খেসারত দিয়েছে বাংলাদেশও। ’৭১’র ভগ্নস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে মাত্র তিন বছরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে পরিণত করেছিলেন সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধির ক্রম বিকাশমান অর্থনীতিতে। তারপরও সংগঠিত হয়েছিল ১৫ আগস্ট।