প্রকাশ: সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:৩৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই শিশু অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুদন্ড, ৩ জনের আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড ও ৩ জনের যাবজ্জীবন সশ্রদ কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানা করেছেন। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২ টায় এ টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলি (এপিপি) খোরশেদ আলম নিশ্চিত করেছেন।
মৃৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে, ধামরাই উপজেলার চরহাট গ্রামের শামছুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া, একই গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন, মির্জাপুর উপজেলার সুজালিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে মো. রনি মিয়া। আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে, মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আ. মালেক, শশ্বধরপট্টি গ্রামের মমরেজের ছেলে জহিরুল ইসলাম, চর চৌহাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শাহনুর শাহা ও যাবজ্জীবন সশ্রদ কারাদন্ড প্রাপ্তরা হচ্ছে চরচৌহাট্ট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে মো. শামীম মিয়া, একই গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ ও মির্জাপুরের আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের জব্বার মল্লিকের ছেলে মো. জাকির হোসেন। একই সাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ (২৮) পলাতক রয়েছেন। এদের মধ্যে মিল্টন ইমরানে ফুপাতো ভাই ও রনি ইমরানে চাচাতো ভাই।
অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলি (এপিপি) খোরশেদ আলম জানান, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার হারিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে যায় ঢাকার ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল (১০) ও একই গ্রামের প্রবাসী আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১)। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন চতুর্থ শ্রেণীর ওই দুই শিক্ষার্থীরা।
পরদিন ২৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে এক করে মোট দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে ২৯ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে নিখোঁজ ওই দুই শিশুর জবাই করা লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩০ জানুয়ারি শনিবার শিশুর মা জোসনা বেগস বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ৮ জুন আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় আদালত।
এর পর ৮ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। বাকি এক আসামী এখনও পলাতক রয়েছেন।
১১জনের নামে পুলিশ চার্জশীট প্রদান করে। এদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম ও মনোয়ারাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আসামী পক্ষের আইনজীবী বলেন, জহিরুল ইসলাম বলেন, এই কান্ডের সাথে আসামীরা জড়িত নয়। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করবো। বামলার বাদি জোসনা বেগম বলেন, ‘রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।