রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের আত্ন সক্ষমতার পরিচায়ক
#আমার ড্রাইভার পদ্মা সেতুর জন্য জীবনের সকল সঞ্চয় দিতে চেয়েছিল: এ কে এম আব্দুল মোমেন #পদ্মা সেতু নির্মাণ করে শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে কুলুপ এঁটে দিয়েছেন: শ ম রেজাউল করিম #শেখ হাসিনা দৃঢ়তা নিয়েই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করে দেখালেন: মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া
সিনিয়র প্রতিবেদক
প্রকাশ: শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:২৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

পদ্মা সেতু আজ বাংলাদেশের আত্ন সংক্ষমতার পরিচায়ক হিসাবে বিশ্বের বুকে দাঁড়িয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকসহ, সকল ষড়যন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আজ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কারণেই আজ বাংলাদেশের স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে।  একটির পর একটি স্প্যানে এখন দৃশ্যমান সেতুটির পুরোটাই। পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছেন। সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন। পদ্মার এই স্বপ্নবুননে চোখ মেলে তাকালো পুরো জাতি, পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশ বিজয়ের মাসে দেখিয়ে দিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা নিজ পায়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে দাঁড়াতে পেরেছি। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৮৫ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। 

শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমিন, মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং জামার্নির রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।

এ কে এম আব্দুল মোমিন বলেন, আমি একটা সত্যি গল্প বলেই শুরু করতে চাই। আমি যখন শুনলাম পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তখন আমি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। তখন আমি আমার অফিসের কলিগদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করার পরই তারা জানালেন, এটা আমাদের ইজ্জ্বতের বিষয়। আমরা প্রবাসীরাই তহবিল গঠন করে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু বানাবো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে। পুরো পৃথিবীতে ১২০ মিলিয়ন বাংলাদেশী প্রবাসী রয়েছেন। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ ডলার করে দিতে পারে, তাহলেই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা যাবে। আমার ড্রাইভার বললো, স্যার আমি নিজের সারাজীবনের সঞ্চিত অর্থ পদ্মা সেতুর জন্য দিতে চাই। এই লোকটা ২৮ বছর ধরে সেখানে কাজ করে অল্প ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে। সারাজীবনের সঞ্চয় হিসাবে প্রায় ২০ হাজার ডলার দিতে রাজি হয়েছে। আমি তখন দেশের অর্থমন্ত্রী আমার আপন বড় ভাই আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে বিষয়টি জানালে, তিনি বলেন,  এখনই কিছু করতে হবে না। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। 

এই ঘটনার পর জাপানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তখন পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের জন্য ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন। পরের দিন তার সাথে বৈঠক করার পর যখন একটা পজিটিভ সাইন পেলাম। তখন বিষয়টি আমি সরকার প্রধান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানোর পর। এমনকি জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াতে জাপান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্রমণ করেন। তখন কথা ছিল ৪ বিলিয়ন ডলার বিনোয়গের জন্য। এরপর জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসার পর ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার প্রস্তাব আসে। ১৯৭৯ সালে জাপান আমাদের কাছে জাতিসংঘের নিরপত্তা পরিষদে হেরেছিল। জাপান আমাদের প্রকৃত বন্ধু। তারা আমাদের বিনিয়োগ করার কথা দিয়েছিল, যদি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পদটি ছেড়ে দিতে হবে। আমরা সমঝোতা করার প্রস্তাবে রাজি হলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাপানি বিনিয়োগ আসেনি পদ্মা সেতুতে। কিন্তু অন্যভাবে জাপান আমাদের সহযোগিতা করেছে। প্রবাসীদের আয়ের মাধ্যমে আজ পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। এটাই আমাদের বাংলাদেশের ইজ্জ্বত রক্ষা হয়েছে। 

শ ম রেজাউল করিম বলেন, আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে চাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমিনকে। তিনি তার স্মৃতি থেকে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে প্রবাসীরা কতটা আকুল ছিল, সেটাই জানিয়েছেন। মোশরারফ হোসেন সাহেব তো এই ঘটনার ভুক্তভোগী। তাকে রিমান্ডেও যেতে হয়েছে। তখন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডিসহ অন্যান্য সুশীল সমাজের অনেকের সাথে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি হিলারী ক্লিনটনকে দিয়ে সরাসরি নগ্ন নোংরা খেলায় মেতেছিলেন। বিএনপির নেতারা তো বলেই ফেলেছিলেন, ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা লুটপাট করার জন্য আওয়ামী লীগ এই পদ্মা সেতু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা মু্ক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই এদেশের স্বাধীনতা বিরোধীরা সক্রিয় ছিল। তাদের বংশধররা এখনো সক্রিয় রয়েছে। ভিশনারী লিডার হিসাবে শেখ হাসিনার আলোয় আলোকিত করেছেন। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করার কাজে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এই পদ্মা সেতুর কারণে ১.২ প্রবৃদ্ধি বাড়বে। দেশের ৩ কোটি মানুষের জীবনের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু এখন আমাদের আত্ন মর্যাদার, সক্ষমতার পরিচায়ক হিসাবে পরিচিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের এমন কোনো খরস্রোতা নদীতে এত বড় সেতু হয়নি। এক সময় পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় যেসব পত্রিকা সমালোচনা করেছিল, তারা এখন তারা পদ্মা সেতু নিয়ে ভালো কথা বলছেন। কিন্তু যারা প্রধান বিরোধী দল হিসাবে নিজেদের দাবি করেন, তারা এখনো সরকারের এত বড় সাফল্যে কোনো কথা বলছে না। তারা মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। তারা এক সময় বলেছিল, এই পদ্মা সেতুর টাকা আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা ভাগ ভাটোরায়া করবে। তাদের রাজনৈতিক উদারতা নেই বলেই এমনটা বলতে পেরেছিল। আমি বিশেষ করে ধন্যবাদ দিতে চাই সাবেক অর্থমন্ত্রী আজকে আমাদের লাইভের অতিথি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর আপন বড় ভাই আব্দুল মুহিত সাহেব কে। তিনি এই বয়সে এসেও যে সাহস ও দৃঢ়তা দেখিয়েছিলেন, তার কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। 

মোশরারফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ২০১১ সালের জুন মাসে বিশ্বব্যাংক তখনো পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের বিষয়ে যুক্ত ছিলো। তখনকার দিনে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি পরিচালক ছিলেন এ্যালেন গোর্সেটে। তিনি তখন আমার অফিসে এসে বললেন আমাদের ওপর মহল মানে বিশ্বব্যাংক সাবেক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী আবুল হোসেনের ওপর বিরক্ত। তাদের কাছে নাকি তথ্য প্রমাণ আছে এই পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে আবুল হোসেন সাহেব সুবিধা নিতে পারে। এধরণের তথ্য প্রমাণ নাকি তাদের কাছে আছে। তাই তাকে মন্ত্রীসভা থেকে সরিয়ে দিতে হবে এবং তাদের পছন্দের লোককে কাজ দিতে হবে। তখন তাকে উত্তর দিয়ে বললাম, প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রী সভার একজন সদস্যকে বাদ দেয়ার এখতিয়ার শুধুই তার। এসব বিষয়ে আমি, অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলতে পারবো না। তারপর তাদের বললাম, এ বিষয়ে সেপ্টেম্বরে কথা বলার জন্য বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট, পরিচালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে আসলেন। এরপরও তারা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি বিশ্বব্যাংক। এরপর জাতিসংঘের অধিবেশেনে যোগ দেয়ার পরও তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি বিশ্বব্যাংক। এরপর জুন মাসে ঋণ বাতিল করলো বিশ্ব ব্যাংক। দৃঢ়তা নিয়ে শেখ হাসিনা মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের ঘোষণা দিলেন। ততদিনে ব্যাংক একাউন্টও খোলা হয়ে গেছে। এমনকি বাংলাদেশের সুশীল সমাজ থেকে শুরু দেশি বিদেশীরা বলেছিল, বাংলাদেশের সক্ষমতাই নেই এ পদ্মা সেতু নির্মাণ করার জন্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছিলেন, বিশ্বব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নিলেও দুর্নীতি প্রমাণ করতে না পারলে নিজস্ব অর্থায়নেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। দুদকের মাধ্যমে আমাকে জেলে নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়তা নিয়েই আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করে দেখালেন। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]