প্রকাশ: সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:২৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সম্প্রতি বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, অস্তিত্বের অহম মুক্তিযুদ্ধ এবং একক সাহস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিকৃত ইঙ্গিতে আওয়াজ তুলতে দেখা যায়। এরা ধৃষ্টতা নিয়ে বলেছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিকে সরিয়ে ফেলবার কথা। বিএনপি ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কৌশলে যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন, ভোটাধিকার এবং ক্ষমতার অংশীদার করবার ফল এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে। তাই তাদের এই ঘাড় এখনি মটকে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে রুখে দাড়াতে হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৮১ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, আওয়ামী লীগ নেতা ফাইয়াজুল হক রাজু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
আবু আহমেদ নাসিম পাভেল বলেন, ধন্যবাদ সঞ্চালককে এতো সুন্দর করে প্রারম্ভিক বক্তব্য দেওয়ার জন্য। আপনার মাধ্যমে ভোরের পাতার অগণিত দর্শক শ্রোতাদেরকে বিজয়ের এই মাসে আসন্ন বিজয় দিবস ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনারা জানেন ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাই এবং তিনি দেশে ফিরে আসার পর তখন একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাকে তুলে দাঁড়ানোর জন্য পরিশ্রম করছিলেন। ঠিক তখন ১৯৭৪ সালে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের দ্বারা দেশে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করা হয়েছিল। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টির মাধ্যমে জাতির পিতা তথা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করার পাঁয়তারা করা হয়েছিল তখন। নানান সাম্রাজ্যবাদীর শক্তিরা তাদের দেশীয় দোসর, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও পরাজিত দেশ, বিদেশি শক্তি এবং ঘাতক চক্র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে হত্যা করেছিল। বিশ্ব মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণিত, বর্বর ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মধ্যে একটি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা। তখন আমরা আরও হারিয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক এবং যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনিকে। মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ নানা চড়াই উতরাই পেড়িয়ে সরকারে এসে আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কয়টি অত্যন্ত প্রশংসাময়ী কাজ সম্পন্ন করেছে তার দুটো হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ট্রাইবুন্যাল গঠন। যুদ্ধাপরাধীর বিচারে প্রতীকী কলঙ্ক মুক্তি ঘটলেও তাদের অনুসারী লাখ লাখ নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে তাদেরই একটা অংশ অত্যন্ত সুচতুরভাবে কৌশলী মেধা নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুভূতিকে অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারকে অস্থির করে, উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ভূলুণ্ঠিত করে ৭১ এর ব্যর্থতার প্রতিশোধ নিতেই ব্যস্ত। কুষ্টিয়ায় জাতির জনকের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হয়েছে। গত ক'দিন আগে মুমিনুল হক আর বাবুনগরী যে দম্ভোক্তি করেছিলেন, আজকের ন্যক্কারজনক ঘটনা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। এই আঘাত শুধুমাত্র একটি ভাস্কর্যের ই অবমাননা নয়, এটি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সর্বোপরি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির এক সর্বনাশা চ্যালেঞ্জ।