‘দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, বঙ্গবন্ধুকে দল-মতের ঊর্ধ্বে ভালোবাসি’:মামুনুল হক
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৯:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
‘দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, স্বাধীনতার মহান নেতা, এই রাষ্ট্রের স্থপতি মরহুম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আমরা দল ও মতের ঊর্ধ্বে উঠে ভালোবাসি, তাকে শ্রদ্ধা করি, তাকে সম্মান জানাই, তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি’ বলেছেন , হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক ।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর নিজের ফেসবুক পেজে ‘ভাস্কর্য নিয়ে বিরোধ, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাসহ উদ্ভূত সার্বিক পরিস্থিতির’ ওপর বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন মামুনুল হক।
এসময় তিনি বলেন, ‘সুতরাং এই বক্তব্যের পর বঙ্গবন্ধুর সম্মানের ওপর আক্রমণকারী হিসেবে আমাদের সাব্যস্ত করাটা কতটা যৌক্তিক, তা দেশবাসীর কাছে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করবো।’
মামুনুল হক বলেন, ‘ভাস্কর্যের বিরোধিতা নিছক ধর্মীয় কারণে করছি। রাজনৈতিক কোনও অভিলাষ নেই। বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে অতিরিক্ত এলার্জি নেই। বঙ্গবন্ধুকে একজন প্রয়াত মুসলিম নেতা হিসেবে স্মরণ করি। তার ভাস্কর্য তৈরি করা হলে আল্লাহর কাছে তিনি লজ্জিত হবেন। আমাদের মহান নেতা পরজগতে আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয়ে পড়ুন, এটা আমরা চাই না। কল্যাণকামিতার জায়গা থেকেই রাষ্ট্র, সরকারকে বঙ্গবন্ধুকে আল্লাহর কাছে লজ্জিত না করার জন্য অনুরোধ করছি। এই অনুরোধ আমরা করেই যাবো।’
কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় রাতের অন্ধকারে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মাধ্যমে একটি অনভিপ্রেত পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত, দুঃখজনক ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাস্কর্য ভাঙার সঙ্গে কেউ কেউ আমার নাম জড়াবার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমি অত্যন্ত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি, আমার কোনও বক্তব্যের মাধ্যমে অথবা আমার কোনও কথায় এভাবে আইন হাতে তুলে নেওয়ার কোনও কথা আমি কস্মিনকালেও বলিনি। দেশের আইনশৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনও ব্যক্তি এমনটা করতে পারে না।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমার বক্তব্য স্পষ্ট, ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে ভাস্কর্য রাখা নাজায়েজ ও হারাম-সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আমি জানিয়ে দিয়েছি এবং আমরা আমাদের বক্তব্যে একথা স্পষ্ট করে দিয়েছি, যদি আল্লাহপাক কখনো আমাদের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সক্ষমতা দান করেন তাহলে শরীয়ার আলোকে সকল কার্যক্রম ঢেলে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।’
মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বারবার বলছি, আমাদের বক্তব্যে নিজেদের মতামত, মনগড়া ব্যাখ্যা বিকৃতরূপে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রদ্রোহের বুনিয়াদ সাজিয়েছে। সারাদেশের আলেমরা বলছেন, আমাদের বক্তব্য কখনও বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়। বরং স্বাধীনতার মহান নেতা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানকে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সকল বাংলাদেশি, সকল বাঙালি শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি। একজন মুসলিম হিসেবে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি।’ তার মন্তব্য, ‘আমাদের সমস্ত বিরোধ হলো ভাস্কর্য তথা মূর্তি নিয়ে।’
লাইভের বক্তব্যে মামুনুল হক উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের মাধ্যমে ইসলামবিরোধী পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিলো। হঠাৎ গজিয়ে উঠা ভুঁইফোড় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চও এইরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। বঙ্গবন্ধুর নামকে ভুঁইফোড় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ দেশের ইসলামবেত্তাদের মুখোমুখি করে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন মামুনুল। এসময় তিনি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চকে উগ্রবাদী বলে অভিযুক্ত করেন।