প্রকাশ: সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:৪১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রোববার (০৬ ডিসেম্বর ) থেকে কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের চৌরখালি গ্রামে প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে এ ফ্যাক্টরির কাজ। মুজিববর্ষে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার ঐ প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে ৫৮ ভিক্ষুক চাকরি পাচ্ছেন।
নতুন বছরের প্রথম দিনেই উৎপাদনে যাবে এ ফ্যাক্টরি। ওই দিন থেকেই ভিক্ষুকরা কাজ শুরু করবেন। ভিক্ষুকের হাত কর্মীর হাতে পরিণত হবে। ফলে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত এসব মানুষকে উন্নয়নের মূলধারায় শামিল করে দেশ একদিন এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির পথে।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, কুশলা ইউনিয়নের চৌরখালি গ্রামের ৫৮ নারী-পুরুষ কয়েক পুরুষ ধরে ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় নিয়োজিত ছিল। বিভিন্ন সময়ে এ পেশা থেকে উত্তরণের উদ্যোগ নেয়া হলেও কখনোই তাদের এ পেশা থেকে নিবৃত করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, এসব ভিক্ষুকের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারি অর্থায়নে উপজেলা প্রশাসন কুশলা ইউনিয়নে একটি প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি নির্মাণ শুরু করেছে। এ উদ্যোগে ভিক্ষুকদের সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ২ ডিসেম্বর চৌরখালি গ্রামে মতবিনিময় সভা হয়। এলাকাবাসী এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সবার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভিক্ষুকরা আশ্বস্ত হয়েছেন। তারা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে চাকরি করতে রাজি হয়েছেন।
কোটালীপাড়ার ইউএনও এসএম মাহফুজুর রহমান বলেন, কোটালীপাড়ায় প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ কারণে সরকারি অর্থায়নে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা ব্যয়ে এ ফ্যাক্টরির কাজ ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু করেছি। বিজয়ের এ মাসেই কাজ শেষ হবে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের প্রথম দিনেই চৌরখালি গ্রামের ৫৮ ভিক্ষুক চাকরিজীবী হিসেবে পরিচিতি পাবেন। তাদের চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা হবে ভিক্ষুক। চাকরি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়তে হবে। এতে তাদের সামাজিক সম্মান বাড়বে। এর মধ্য দিয়ে নতুন এক বিজয় অর্জনে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।
ইউএনও আরো বলেন, ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের এ পরিকল্পনা সফল হলে পরিবর্তন হবে চৌরখালির, পরিবর্তন হবে কোটালীপাড়ার। এভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তনের মধ্যে দিয়েই আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল বলেন, এ উদ্যোগ দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে। আমাদের দেশে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত সমৃদ্ধ হবে।
চৌরখালি গ্রামের ভিক্ষুক রাবেয়া, আমিনা, সাহানা বলেন, ভিক্ষা করতে চাই না। কাজ করেই খেতে চাই। ভিক্ষায় কোনো সম্মান নেই। এতদিন কোনো ভালো কাজ পাইনি। তাই ভিক্ষা করছি। এখন উপজেলা প্রশাসন ফ্যাক্টরি করে চাকরি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা এ পেশা ছেড়ে দেব।