জাবি'র স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:২৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (০৫ ডিসেম্বর ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে অনলাইনে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় পরীক্ষার নতুন পদ্ধতির একটি প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়। স্নাতকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় চতুর্থ বর্ষের কোর্সের ৫০ শতাংশ নম্বর মূল্যায়ন ও বাকি ৫০ নম্বর পূর্বের তিন বছর বা ৭টি সেমিস্টারের পরীক্ষার ফলাফলের গড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাডেমিক কাউন্সিল।
৫০ নম্বর মূল্যায়নের মধ্যে চতুর্থ বর্ষের কোর্সের ২০ নম্বরের ভাইভা, ২০ নম্বরের অনুশীলনী পরীক্ষা ও উপস্থিতির ওপর ১০ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক সভায় এসব সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও একাডেমিক কাউন্সিল সদস্য ড. সৈয়দ হাফিজুর রহমান বলেন, একাডেমিক কাউন্সিল চতুর্থ বর্ষের কোর্সের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করার ওপর তাগিদ দিয়েছে। চতুর্থ বর্ষের কোর্সের ওপর ৬০ নম্বরের মূল্যায়ন হতে পারে। তবে সেটা সিদ্ধান্ত নিবে সিন্ডিকেট।
এর আগে ৮ জুলাই গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট ‘টেকনিক্যাল কমিটি’ পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে এসব প্রস্তাবনা পেশ করে। একাডেমিক কাউন্সিল এ প্রস্তাবনাগুলো যাচাই বাছাই করে আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে সব বিভাগের চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
টেকনিক্যাল কমিটির প্রস্তাবনা হলো- পূর্বের নিয়মে ক্লাস উপস্থিতি ও টিউটারিয়াল থেকে ৩০ নম্বর এবং অনলাইনে ২০ নম্বরের ভাইভা নেয়া হবে। এছাড়া পূর্ববর্তী বর্ষ/সেমিস্টার পর্যন্ত প্রাপ্ত জিপিএ হতে ৫০ নম্বার। যা ৩য় বর্ষ/৭ম সেমিস্টার পর্যন্ত প্রাপ্ত জিপিএ-কে নম্বরে রূপান্তর করে চূড়ান্ত মূল্যায়ন করা হবে। এভাবে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাবনা একাডেমিক সভায় পাস হয়েছে।
এছাড়া যাদের ৪র্থ বর্ষের কিংবা ৮ম সেমিস্টারের কিছু কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অবশিষ্ট নম্বরের একটি অংশ ৪র্থ বর্ষের অথবা ৮ম সেমিষ্টারের সম্পন্ন হওয়া কোর্সের প্রাপ্ত জিপিএ-কে নম্বরে রূপান্তর করে এবং অবশিষ্ট অংশ ৩য় বর্ষ/ ৭ম সেমিস্টার পর্যন্ত প্রাপ্ত জিপিএ-কে নম্বরে রূপান্তর করে চূড়ান্ত মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
কত অংশ ৪র্থ বর্ষের অথবা ৮ম সেমিস্টারে সম্পন্ন হওয়া কোর্সের প্রাপ্ত জিপিএ থেকে এবং কত অংশ পূর্ববর্তী বর্ষ/ সেমিস্টার পর্যন্ত প্রাপ্ত জিপিএ হতে নেয়া হবে, তা নির্ধারণ করা যেতে পারে ৪র্থ বর্ষের ৪র্থ বর্ষের অথবা ৮ম সেমিস্টারের মোট কোর্সের মধ্যে চূড়ান্ত মূল্যায়ন সম্পন্ন হওয়া কোর্সের শতকরা হারের ওপর ভিত্তি করে।
এদিকে এসব প্রস্তাবনা যদি কিছু পরিবর্তন পরিমার্জন করা লাগে তাহলে টেকনিক্যাল কমিটি ও ডিন কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থার করার কথা জানিয়েছে একাডেমিক কাউন্সিল।
টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অধ্যাপক হাফিজুর রহমান বলেন, ২০ নম্বরের ভাইভা নেয়ার ক্ষেত্রে কোর্স শিক্ষক ও একজন বহিঃস্থ শিক্ষক উপস্থিত থেকে মূল্যায়ন করবেন। এছাড়া চতুর্থ বর্ষের ৫০ নম্বরের ভাইভাটি অনলাইনে পরীক্ষা কমিটি সম্পন্ন করবেন।
যারা তৃতীয় বর্ষের দু’একটি কোর্সে উত্তীর্ণ হতে পারেনি তাদের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা তৃতীয় বর্ষ বা অন্য যে কোনো বর্ষের কোন কোর্সে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন তাদের চতুর্থ বর্ষের ফলাফল উইথেল্ড থাকবে। পরবর্তীতে ওসব কোর্সে উত্তীর্ণ হলে তবে তার স্নাতকে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশ করা হবে।’
অধ্যাপক হাফিজুর রহমান আরো বলেন, একাডেমিক কমিটি প্রত্যেক বিভাগের একাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। যাতে করে দ্রুততম সময়ে অন্যান্য বর্ষের পরীক্ষাও নেওয়া সম্ভব হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন বলেন, স্নাতকে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষার ফি নেয়া হবে না। যারা স্নাতকের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য ফি জমা দিয়েছে তাদেরকে সে টাকা ফেরত দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, টেকনিক্যাল কমিটি এই প্রস্তাবটি দিয়েছে। সেটার উপরে একাডেমিক কাউন্সিলে ব্যাপক আলাপ আলোচনা হয়েছে এবং বহু নতুন প্রস্তাবনা, সাজেশান হয়েছে এবং দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই সাজেশনগুলি বিচার বিবেচনা করে প্রশাসন, টেকনিক্যাল কমিটি ও ডিন কমিটি বসে চূড়ান্ত করবে। এটি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। একাডেমিক কাউন্সিল বলছে যেভাবেই হোক চতুর্থ বর্ষকে বের করে দিতে হবে।