প্রকাশ: সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:১৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রামে পরকীয়ার জেরে ভাবির হাতেই খুন হন স্বর্ণের দোকানের কারিগর মাধব দেবনাথ (২৪)। লাশ উদ্ধারের একদিনের মাথায় চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ।
এক সময়ের পরকীয়া প্রেমিক, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রে দূর সম্পর্কের দেবর। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে মাধব দেবনাথের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে বিথির। লকডাউনের সময় সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হওয়ায় কথা হতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমোতে। আর ইমোতে কিছু ব্যক্তিগত ভিডিও বিনিময় করেন বিথী।
এই ভিডিও কাল হয়ে উঠেছিলো বিথীর জন্য। মাধবের সঙ্গে বিথী সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলে ভিডিও দেখিয়ে জিম্মি করে শারিরীক সম্পর্ক করার জন্য বাধ্য করতে চেয়েছিল বিথীকে। এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে মাধবকে বাসায় ডেকে এনে কৌশলে খুন করার পর সেই লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রেখেছিল তিনদিন।
পুলিশ হত্যাকারী বিথী দেবনাথকে গ্রেফতারের পর রোববার চট্টগ্রাম আদালতে পরকীয়া প্রেমিককে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন জানান, পরকীয়ার জেরেই খুন হন মাধব দেবনাথ। শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন তার দূর সম্পর্কের ভাবি বিথী দেবনাথ। বিথী দায় স্বীকার করে রোববার মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেট সরোয়ার জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
ওসি জানান, গত শুক্রবার রাতে বিথী দেবনাথের খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় মাধব দেবনাথের মরদেহ। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বিথী জানায়, মাধব বিথীর স্বামী পিন্টুর ফুফাতো ভাই। সে তাদের বাসায় খোরাকি (টাকার বিনিময়ে খাবার) খেত। এরমধ্যেই বিথী-মাধব পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে যা শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ায়।
এক সময় আর্থিক বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে বিথীর বাসায় আসা বন্ধ হয়ে যায় মাধবের। তাই সে বিথীকে বাইরে দেখা করার জন্য চাপ দেয় মাধব। নতুবা বিথীর অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। বিথী দেখা করলেও মাধব ফেসবুকের একটি ফেক আইডি থেকে সেসব ভিডিও স্বামী পিন্টুকে দিয়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিথী মাধবকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
এরমধ্যে গত ২ ডিসেম্বর মাধব বিথীর বাসায় আসে। এরপর কৌশলে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। পরে ঘরের মধ্যে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ টের পেয়ে বিথীর স্বামী পিন্টু পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ওই খাটের নিচ থেকে লাশ উদ্ধার করে।
উক্ত ঘটনায় জড়িত পিন্টু দেবনাথের স্ত্রী বিথী দেবনাথকে আটক করে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে সে ভিকটিমকে হত্যার কথা স্বীকার করে।