প্রকাশ: শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:২৯ পিএম আপডেট: ০৫.১২.২০২০ ৪:৩০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
গত ২৪ নভেম্বর দৈনিক ভোরের পাতা অনলাইনে এবং পরদিন ২৫ নভেম্বর পাঠক প্রিয় পত্রিকারটির শেষ পৃষ্ঠায় একটা প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। যার শিরোনাম ছিল ‘আব্দুল ওহাবকে তিতাস গ্যাসের এমডি করতে মরিয়া সিন্ডিকেট।’ এরপরই ওহাব তালকুদারের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় বলে মনে করেন তিতাস গ্যাসের সৎ এবং দক্ষ কর্মকর্তারা।
ভোরের পাতার সিনিয়র প্রতিবেদক উৎপল দাসের সাথে আলাপকালে বলেন, তিতাস গ্যাসে এমন কোনো কালো সিন্ডিকেটের থাবা থেকে রক্ষা করতেই দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী মো. আব্দুল ওহাবকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। যদিও তিনি এখনো আগের পদেই আছেন। বর্তমানে তিতাস গ্যাসের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিষয়ক মহাব্যবস্থাপক পদে দায়িত্ব পালন করছেন দুর্নীতিবাজ এই ওহাব। এমডি হতে না পারার বেদনা নিয়ে ওহাব তালুকদার তার এক ঘনিষ্ঠজনকে বলেছেন, ‘আমার মনটা ভেঙে গেছে। যেখানে যেভাবে দেয়ার কথা ছিল তাইতো দিলাম, কাজ টা যেন কেন হলো না, সেটার হিসাব মিলাতে হবে। যে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আমি বিশেষ মহলকে সুবিধা দিয়েছি তাদেরকেও ছাড় দিবো না।’
ওহাব তালুকদারের এই ঘনিষ্ঠজন আরো বলেছেন, এমডি হতে না পারলেও সিন্ডিকেটকে দেখে নিবেন বলেও নাকি হুমকি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে সরকারের দুইজন প্রতিমন্ত্রীর এপিএস এবং একটি বেসরকারি টেলিভিশনের মালিকসহ কয়েকজন সাংবাদিকও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এই সিন্ডিকেট তার কাছ থেকে তিতাসের এমডি বানাবে বলে যেসব অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সময় আসলে সেসব তিনি সুদে আসলে তুলে নিবেন। সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী এক সাংবাদিক নাকি যার বিরুদ্ধে ছাত্র জীবনে ছাত্র শিবির করার অভিযোগ রয়েছে এবং জামায়াতপন্থী বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি টেলিভিশনে কাজ করেন। বেসরকারি টেলিভিশনের মালিকসহ কয়েকজন সাংবাদিকরা নাকি ওয়াহ তালকুদারকে কথা দিয়েছিল, ‘ওহাব ভাই, আপনিই এমডি হবেন তিতাসের। পৃথিবীর কোথাও আপনার বিরুদ্ধে নিউজ হবে না। এই দায়ভার নেয়ার পরও কিভাবে ভোরের পাতায় সংবাদটি আসলো তা নিয়ে ওহাব তালুকদার নাকি নিজের মাথার চুলও টেনে টেনে বলেছেন, এবার পারি নাই তো কি হয়েছে, ভবিষ্যতে হবো। কিন্তু যারা আমার কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে তাদেরকে ছাড় দেবো না, শুধু দিন ফেরার অপেক্ষায় আছি বলেও নাকি চিৎকার করেছেন দুর্নীতিবাজ ওহাব তালুকদার।
উল্লেখ্য, ওহাব তালুকদারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দেয়। দুদকের তৎকালীন উপ পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম স্বাক্ষরিত (স্বারক নং: ০০.০১.০০০০.৫০২.০১.০৯০.১৮/৩৭৯৮৪) চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকৌশলী আব্দুল ওহাব তালুকদার গাজীপুর জোনে তিতাস গ্যাসের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনিময়, দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে অবৈধ গ্যাস সংযোগ, গ্রাহকের বিল কমানো, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করা , বিচ্ছিন্ন সংযোগে অনুমোদন ছাড়াই পুনঃসংযোগ দিয়ে কোটি কোটি আত্নসাৎপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। ওই সময় বিষয়টির তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। তবে অদৃশ্য শক্তির চাপে এবং সিন্ডিকেটের কালো থাবায় সেই তদন্তটিকে প্রভাবিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেটি আবারো চালু করে তদন্ত করার দাবিও জানিয়েছেন তিতাসের লোকজন।
এদিকে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল) সংক্ষেপে তিতাস গ্যাসের এমডি হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের বর্তমান এমডি প্রকৌশলী আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ। পেট্রোবাংলা থেকে তাকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।