প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৫৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সম্প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অনাহূত বিতর্কের সৃষ্টি করছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাদের আস্ফালন দিন দিন বেড়ে চলেছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মাথাচাড়া দিতে দেয়া হবে না। আসলে মৌলবাদীদের টার্গেট ভাস্কর্য নয়, তাদের আসল টার্গেট বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৭৮ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। শুক্রবার (০৪ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, জার্মান আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আহমেদ সেলিম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. মো. আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, ঢাকা আঞ্চলিক ব্যাপটিস্ট চার্চ সংঘ, ঢাকা এর প্রধান পালক রেভারেন্ড রোনাল্ড দিলীপ সরকার। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অ্যারোমা দত্ত বলেন, আমি প্রথমেই আপনাকে ও ভোরের পাতাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি আজকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের এই বিষয় নিয়ে সংলাপ আয়োজন করার জন্য। প্রথমত আমি এটার বিরুদ্ধে গভীরভাবে নিন্দা প্রকাশ করছি। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে তাদের এতো বড় স্পর্ধা কিভাবে হয়। এই দেশে বসবাস করে, এই দেশের নাগরিক হয়ে সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে এই দেশের জাতির পিতাকে নিয়ে তাদের এতো বড় সাহস কি করে হলো। আজকে যখন আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী পালন করছি এবং ২০২১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধের ৫০তম সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি সেসময় এই ইস্যুটা কেন টানা হবে। অবশ্যই এর পিছনে কোন না কোন ষড়যন্ত্র আছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের ষড়যন্ত্রই কিন্তু বর্তমান ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য তনায় আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নে টয়টুম্বুর করে সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করেছেন, সেখানে আমি মনে করি এই জায়টাকে ধাক্কা দেওয়ার জন্যই তাদের এই প্রচেষ্টা হচ্ছে। বাংলাদেশের ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে অবস্থান আসলে বাংলাদেশ ও বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিরুদ্ধেই অবস্থান। পাকিস্তানপন্থী স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ধর্মভিত্তিক দল ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের আসল টার্গেট সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা। ৭৫ এর পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার যে রাজনীতি শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধীতা সেই রাজনীতিরই অংশ। আমার এই জায়গাটা খারাপ লাগছে অনেক। যেখানে বঙ্গবন্ধু জাতী, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে গোটা বাঙ্গালির জাতির পিতা হিসেবে বিবেচিত সেখানে তাকে নিয়ে কেন এই ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যে যে সকল ষড়যন্ত্রকারীরা ছিল তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।