সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
মানবাধিকার ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ
প্রসঙ্গ:১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস
শাহ মোহাম্মাদ শামছুদ্দিন
প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৪০ পিএম আপডেট: ০৪.১২.২০২০ ১:৪২ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

মানবধিকার বর্তমান বিশ্ব খুবই আলোচিত শব্দ। বিশ্বে প্রতিনিয়ত মানবধিকার লঙ্গিত হচ্ছে। মানুষের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের মধ্যে রয়েছে জীবন ধারনের অধিকার, ধর্মেও অধিকার, কর্মসংস্থানের অধিকার,পরিবার গঠনের অধিকার, ন্যায় বিচার লাভের অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার, এই অধিকার লঙ্গিত হলে মানুষের বেচে থাকা অর্থহীন ও অসম্ভব হয়ে পড়বে।

১৯৪৮ সালের ১০ ই ডিসেম্বর জাতিসংঘে সর্বজনীন মানবধিকার সনদ ঘোষিত হয় এবং এ সনদ কার্যকারী করার জন্য মানবধিকার কমিশন গঠন করা হয়। জাতিসংঘের ঘোষিত সার্বজনীন ঘোষনা পত্রের ৩০ টি ধারা মানুষের মৌলিক ও আইনগত অধিকার সংরক্ষনের জন্য চমৎকার ও অতুলনীয়। ইসলামী মানবধিকার পৃথিবীর কোন অপশক্তি নেই যে সে সকল মানবধিকার কখনো রহিত করতে পারে। ইসলামে মানবধিকার ধারনা শুধু কোন ঘোষনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এর প্রত্যেকটি মুসলমানের ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ইসলাম মানুষের মর্যাদার উপর অসাধারন গুরুত্বরোপ করেছেন। এই বিশ্বচরাচরে সৃষ্টিকুলের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদাবান হচ্ছে মানুষ। তাকে অন্যান্য সকল সৃষ্টির তুলনায় উত্তম কাঠামোর সৃষ্টি করা হয়েছে। এবং জগতের সমস্ত নিয়ামত ও শক্তিসমূহ মানুষের নিয়ন্ত্রনাধীন করে তার সেবায় নিয়োজিত করেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,“তোমরা কি দেখনা যে, আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সবই তোমাদের কল্যানে নিয়ন্ত্রনাধীন রেখেছেন এবং তোমাদের প্রতি তার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অনুগ্রহ প্রকাশ করেছেন।” (সূরা লোকমান-২০)
মানবধীকারের সার্বজনীন ঘোষনার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে মানুষে মানুষে সকল বৈষম্যের বিলোপের কথা এসেছে। ইসলাম ধর্ম ও এরুপ বৈষম্যের বিপক্ষে। ইসলাম মানবজাতিকে জন্মগত ভাবে সমানভাবে সমান মর্যাদায় অভিসিক্ত করেছে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,“ ও মানবজাতী! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন গোত্র ও বংশে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পারো। আর তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি অধিক মর্যাদাবান যে অধিক মুক্তাকী।” (সূরা হুজরাত-১৩)
মানুষের জীবন, স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে মানবজীবন অতি পবিত্র এক সম্পদ। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,“ আল্লাহ যে জীবনকে হত্যা করা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারন ছাড়া তোমরা তকে হত্যা করো না। এবং যদি কেউ অন্যায়ভাবে মারা পড়ে। তার উত্তরাধিকারীকে তো আমি ক্ষমতা দিয়েছি প্রতিকার করার। কিন্তু সে যেন হত্যার ব্যাপারে সীমা অতিক্রম না করে। কেননা সে সাহায্য পেয়েছে।”(সূরা বনী ঈসরাঈল-৩৩)

ইসলাম মানব জীবন অসংগত কারনে হরন করতে নিষেধ করেছে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,“নর হত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের অপরাধে অভিযুক্ত কার্যকলাপের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠিকে হত্যা করলো।” (সূরা মায়েদা-৩২)
ইসলামী শাসনে ন্যায্য বিচার পাবার অধিকার রয়েছে খুনের বদলে খুন, ব্যভিচারের শাস্তি আপাত দৃষ্টিতে নিষ্ঠুর মনে হলেও সমাজে স্থায়ী শান্তি আনার জন্য সুষ্ঠ বিচারের বিকল্প নেই। ইনসাফ এবং সাম্যনীতি ইসলামী বিচার ব্যবস্থার অন্যতম মূল বৈশিষ্ট। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,“তোমরা যখন মানুষের মাঝে বিচারকার্য্য পরিচালনা করবে তখন ন্যায় পরায়নতার সাথে করবে।” (সূরা নিসা-৫৮)

ইসলামে হালাল উপায়ে অর্জিত ও ব্যক্তিগত সম্পদ স্বীকৃত। তবে এ ক্ষেত্রে শরীয়াত নির্ধারিত সমস্ত অধিকার ও কর্তব্য পালন করতে হবে। মাতা-পিতা, স্ত্রী, পুত্র-কন্যা ও নিকটাত্বিয়ের লালন পালন ও দায়িত্ব ভার গ্রহন করতে হবে। অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করা যাবে না। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।” (সূরা বাকারা-১৮৮)

ইসলাম মানুষের বিবেক ও ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়েছে। দীনের ব্যাপারে কোন যবরদস্তি নেই। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,“দীনের ব্যাপারে কোন যবরদস্তি নেই। সত্য পথ ভ্রান্ত পথ থেকে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে।” (সূরা বাকারা-২৫৬)

রাসুল (স.) তার কথা ও কর্মের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ ও আন্তজার্তিক অঙ্গনে চূড়ান্ত ও বাস্তবরুপে মানবধিকার প্রতিষ্ঠিত করে সমফলকাম হয়েছে। বিদায় হজ্জে রাসুল (স.) যে ভাষন দান করেন কুরআন ও হাদীসে এর স্বকৃতি এ ভাবে দেয়া হয়েছে। “অদ্য আমি তোমাদের দ্বীনকে পূর্নতা দান করলাম, তোমাদের উপর আমার নিয়ামতের পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য জীবন ব্যবস্থা হিসেবে মনোনীত করলাম।” (আল কোরআন)

লেখক: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]