সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
হালাল উপার্জনেই রয়েছে বরকত
শায়খ সালেহ বিন মুহাম্মদ আলে ত্বালেব
প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৪০ পিএম আপডেট: ০৪.১২.২০২০ ১:৪২ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থ-সম্পদের প্রতি টান আর ভালবাসা মানবপ্রকৃতির অংশ। মানুষের স্বভাবজাত প্রবণতা। আল্লাহ বলেন : ‘এবং তোমরা ধন-সম্পদকে প্রাণভরে ভালবাস’। (সূরা আল ফজর : ২০)। আর হালাল উপার্জন ও সৎপথে রোজগার ইসলামী শরিয়তে একটি প্রশংসনীয় অধ্যায়। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমে এর নির্দেশ প্রদান করেছেন। অন্যদিকে রাসূল (সা.) বলেছেন : ‘নিজ হাতের উপার্জিত খাবারই হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট। আল্লাহর নবী দাউদ (আ.) নিজ হাতের কামাই খেতেন’। (বুখারী)

সব সৃষ্টির ¯্রষ্টা আল্লাহ। তিনি পালনকর্তা এবং তিনিই রিজিকদাতা। হালাল-হারাম নির্ধারণের দায়িত্ব একমাত্র তাঁর। তাই তিনি ধন-সম্পদে হালাল হারাম বর্ণনা করে একে পরীক্ষা এবং সৎ ব্যক্তি যাচাইয়ের মাধ্যম বানিয়েছেন। এবং হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ করেন : ‘হে মানবম-লী, পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু-সামগ্রী ভক্ষণ কর। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না; সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ ( সূরা আল বাক্বারা : ১৬৮)। অন্যত্র তিনি বলেন : ‘আল্লাহ যেসব বস্তু তোমাদেরকে দিয়েছেন, তন্মধ্যে থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু খাও এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী।’ (সূরা আল-মায়িদা : ৮৮)

হালাল ও সৎপথ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে যা অসৎ ও হারাম পথে অর্থাৎ চুরি, ডাকাতি, সুদ, ঘুষ ও অবৈধভাবে উপার্জিত নয়। আর পবিত্র দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে যা অপবিত্র ও দুষিত নয় যেমন মৃত জিনিস, শুকরের গোস্ত, মদসহ এজাতীয় খাবার। হালাল ও সৎপথে উপার্জনকারীরা মূলত ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে হয় অনুগত। মন ও অন্তর তাদের পবিত্র। তারা হয় প্রশান্ত হৃদয়ের অধিকারী। হালাল উপার্জনকারীদের মান-সম্মান, ইজ্জত ও মর্যাদা থাকে সুরক্ষিত। তাদের জীবন হয় সুখী ও আনন্দময়, উপভোগী ও সাচ্ছন্দময়। মানুষের মাঝে তারা থাকে প্রশংসনীয়। আর তাদের রিজিকে আল্লাহ তায়ালা দান করেন বরকত ও প্রাচুর্য।

এসব কারণে হালাল খাদ্য ও সৎ উপার্জনের পথ অনুসন্ধান করা রাসূল (সা.) সহ সাহাবায়ে কেরামের একটি প্রধান গুণ ও বৈশিষ্ট্য ছিল। আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পূর্ববর্তী ওলামায়ে কেরাম পানাহার, আয়-উপার্জনে সতর্কতা অবলম্বনের উপদেশ দিতেন। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন : ‘যে ব্যক্তি পবিত্র খাবার গ্রহণ করবে, সুন্নাত অনুযায়ী আমল করবে এবং মানুষ তার অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি)। অন্য হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন : ‘চারটি বিষয় যদি তোমার মাঝে থাকে তাহলে দুনিয়ার আর কিছু না থাকলেও তোমার কোন ক্ষতি নেই। আর তা হচ্ছে : আমানত রক্ষা করা, সত্য কথা বলা, উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া এবং হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করা।’ (মুসনাদে আহমাদ)
আল্লাহ নিজে পবিত্র; তাই তিনি পবিত্রতাকেই পছন্দ করেন এবং গ্রহণ করেন। আর মানুষ যখন পবিত্র হয় তখন তার সব কিছুই হয় পবিত্র। তাদের প্রতিদান হয় জান্নাত। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন : ‘ফেরেশ্তা যাদের জান কবজ করেন তাদের পবিত্র থাকা অবস্থায়। ফেরেশ্তারা বলেন : তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। তোমরা যা করতে, তার প্রতিদানে জান্নাতে প্রবেশ কর। (সূরা নাহল : ৩২)।
হালাল উপার্জন করা এবং এর সমূহ পথ অনুসন্ধান করা সকলের জন্য ওয়াজিব। কেয়ামতের মাঠে ধন-সম্পদ কোত্থেকে উপার্জন করেছে আর কিভাবে ব্যয় করেছে এর উত্তর না দিয়ে কেউ পার পাবে না। এজন্য পূর্বসুরী সৎ মানুষদের হালাল উপার্জন ও ভক্ষণের বিষয়ে অনেক ঘটনা পাওয়া যায়। আবু বকর ও ওমর (রা.) এর ব্যাপারে প্রসিদ্ধ ঘটনা রয়েছে,  হাদিয়ার বস্তু খেয়ে যখন জেনেছেন যে এটা হাদিয়া প্রদানকারী অসৎ উপায়ে অর্জন করেছে: তখন তা বমি করে ফেলে দিয়েছেন। এক নেককার মহিলা তার স্বামীকে বলেছে, ‘আমরা ক্ষুধাবস্থায় ধৈর্য ধারণ করবো কিন্তু জাহান্নামের আগুন (হারাম খাদ্য) সহ্য করতে পারবো না।’

অনেক মুসলমান ভাল কাজ করে, নেক আমল করে। কিন্তু উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল-হারাম বিচার করে না। সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতির কোন ধার ধারে না। রাসূল (সা.) বলেছেন : একটা সময় এমন আসবে যখন মানুষ ধন-সম্পদ হালালভাবে উপার্জন করলো না হারামভাবে তার দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রƒক্ষেপ করবে না।’ (বোখারি)

হারাম উপার্জনকারী ব্যক্তি দুনিয়াও হারায়, আখেরাতও হারায়। তার কোন আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হয় না। তার দোয়া কবুল হয় না। কোন বরকত থাকে না তার সম্পদে। রাসূল (সা.) বলেন : ‘হে সাদ, পবিত্র খাবার গ্রহণ কর, তাহলে তোমার দোয়া কবুল হবে। সেই সত্তার কসম যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ; বান্দা যখন তার মুখে হারাম উপায়ে কোন লোকমা গ্রহণ করে আল্লাহ চল্লিশদিন তার কোন আমল কবুল করেন না। আর যে ব্যক্তি বেড়ে ওঠে অবৈধ সম্পদ আর হারাম উপার্জিত অর্থে তার জন্য জাহান্নামের আগুনেই উত্তম।’

অসৎ ও অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদের দান-সদকাও কবুল হয় না। সুদ, ঘুষ, চুরি, ডাকাতি আর হারাম ব্যবসা-বাণিজ্যের অর্থ সম্পদের দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য প্রত্যাশা করা যায় না। রাসূল (সা.) বলেন : ‘পবিত্রতা ছাড়া নামাজ আর চুরির ও আত্মসাতের সম্পদের সদকা কবুল হয় না’। (মুসলিম)

মক্কার হারামের জুমার খুতবাআরবী থেকে ভাষান্তর : মহিউদ্দীন ফারুকী
আরবী ভাষা ও সাহিত্য, মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]