প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:১৪ এএম আপডেট: ০৪.১২.২০২০ ১:৩৮ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
ছয় চিনিকল বন্ধ ঠেকাতে পাঁচ দফা দাবিতে পাবনা সুগার মিলসহ চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষি ফেডারেশন যৌথভাবে গত কয়েক দিন ধরে চিনিকল এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছে। গতকাল পাবনা সুগার মিলসহ ছয় চিনিকল বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ ও মিল গেটের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে কয়েকশ শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষি। এদিন সকালে শ্রমিক-কর্মচারী ও আখ চাষিরা সুগার মিলের সামনে বিক্ষোভ করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা বিক্ষোভে রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। সড়ক অবরোধকারীরা রাস্তায় শুয়ে ও বসে মিল বন্ধের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে র্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মহাসড়ক ছেড়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানালে শ্রমিকরা মিল গেটের সামনে বিক্ষোভ করেন।এর আগে গত বুধবার পাবনা সুগার মিলসহ দেশের ছয় চিনিকল বন্ধের প্রতিবাদে পাবনা সুগার মিলের সামনে শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। মিল চালু রাখার দাবি জানিয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন পাবনা সুগার মিলস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহীন, সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। সভাপতিত্ব করেন আখচাষি ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান আলী বাদশা। শ্রমিক-কর্মচারীরা জানান, গত মঙ্গলবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের ১১৬ নম্বর স্মারকের এক চিঠিতে বলা হয়, চিনি আহরণের হার, আখের জমি, মিলের অবস্থা/দক্ষতা, লোকসান ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বিবেচনায় চলতি আখমাড়াই মৌসুমে ১৫ চিনিকলের মধ্যে নয় চিনিকলে আখ উৎপাদন ও মাড়াই বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে আখমাড়াই বন্ধ থাকবে ছয় চিনিকলে। আগামী মৌসুমে বাকি তিন চিনিকলও বন্ধ হবে। আখমাড়াই স্থগিত হওয়া চিনিকলগুলোর মধ্যে রয়েছে পাবনা সুগার মিল, কুষ্টিয়া সুগার মিল, পঞ্চগড় সুগার মিল, শ্যামপুর সুগার মিল, রংপুর সুগার মিল ও সেতাবগ্ঞ্জ সুগার মিল।
এই চিঠি বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশনের থেকে গত বুধবার ১৯১৯ নম্বর স্মারকে পাবনা সুগার মিলে পাঠানো হয়। করপোরেশনের এই চিঠি পাবনা সুগার মিলে আসার আগে মঙ্গলবার বিকেলে মিলের কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিদের মধ্যে মিল বন্ধের বিষয়টি জানাজানি হয়। গত মঙ্গলবার বিকেলে থেকেই শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষুব্ধ ছিলেন। গত বুধবার চিঠি পৌঁছালে তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
যেসব মিলে চলতি মৌসুমে আখমাড়াই করা হবে না সেসব এলাকায় উৎপাদিত ও কৃষকের সরবরাহকৃত আখ নিকটস্থ চালু চিনিকলে পরিবহন করে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। উৎপাদন স্থগিত হওয়া মিল থেকে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চালুকৃত মিলে সংযুক্ত/বদলিপূর্বক সমন্বয় করা হবে। পরবর্তী মৌসুমে ফরিদপুর চিনিকল ও রাজশাহী চিনিকলেও আখমাড়াই স্থগিতের পরিকল্পনা গ্রহণের কথা চিঠিতে বলা হয়েছে।পাবনা সুগার মিলস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জল জানান, আখ চাষি ফেডারেশনসহ ছয় চিনিকলের নেতৃবৃন্দের ঢাকায় সমবেত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকেই বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।