প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:১৪ এএম আপডেট: ০৪.১২.২০২০ ১:৩২ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার শুনানিতে বিচারকের প্রতি ‘অনাস্থা’ জানিয়ে সাক্ষীকে জেরা না করে এজলাস ত্যাগ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানকে একটি দরখাস্ত দিয়ে কারাগারে আটক ২২ আসামির আইনজীবীরা বলেছেন, এ আদালতে ‘ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায়’ তারা অন্য কোনো আদালতে মামলা স্থানান্তরের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করবেন। সেজন্য মামলার কার্যক্রম দুই সপ্তাহ মুলতবি রেখে সময় দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের দরখাস্তে। আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো বলেন, সিআইডির বিশেষজ্ঞ রকিবুল হাসান এ মামলার ৩৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে ইতোপূর্বে সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তার জেরা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আসামিপক্ষকে না জানিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে আবারো আজ (গতকাল) তাকে এনে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। মামলায় নিরপেক্ষ বিচার নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় আমরা বিচারকের প্রতি অনাস্থা দিয়েছি।’
বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আইনজীবীদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪০ ধারায় এর আগের সাক্ষীকে রিকল করেছে। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তখন বলেন, রিকলের আবেদনের ওপর দুই পক্ষকে শুনানি সুযোগ দিতে হয়, যা এক্ষেত্রে দেওয়া হয়নি। এরপর আইনজীবীরা ওই সাক্ষীকে জেরা না করেই বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে এজলাস ত্যাগ করেন। তাদের আবেদনে বলা হয়, ‘এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের ৩১ নম্বর সাক্ষী ডা. সোহেল মাহমুদ সাক্ষ্য দেওয়ার সময় যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তা কম্পিইটারে কম্পোজ করা ছিল। তার জবানবন্দি আগেই নথিতে জবানবন্দি হিসাকে সন্নিবেশিত হয়েছে। তাছাড়া আসামিপক্ষের বিভিন্ন সাক্ষীকে জেরার বিষয় হুবুহু রেকর্ড করা হয়নি, যা আইনসম্মত নয়।’
পরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আবদুল্লাহ ভূঞা বলেন, ‘মামলার শেষ পর্যায়ে এসে আসামিপক্ষ বিচার বিলম্বিত করার জন্য এসব করছেন।’ এর আগে গত ৩০ নভেম্বর আদালতে সাক্ষ্য দেন রাষ্ট্রপক্ষের ৩৯তম সাক্ষী সিআইডির উপপরিদর্শক জাকির হাসান ইমন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সেদিন তাকে জেরাও করেন। বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করে। এতে তার মৃত্যু হয়। পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়া থেকে এসে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। এক মাস পর ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। গত ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। আসামিদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।