প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:১৪ এএম আপডেট: ০৪.১২.২০২০ ১:৩২ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
স্বামীর সঙ্গে সিলেটের এমসি কলেজে বেড়াতে যাওয়া এক নববধূকে ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় আটজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। ঘটনার দুই মাস ৭ দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য সিলেটর মুখ্য মহানগর হাকিম আবুল কাশেমের আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন বলে আদালত পুলিশের সহকারী কমিশনার খোকন চন্দ্র সরকার জানান। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমানকে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আটজনের জনের মধ্যে ছয়জন ধর্ষণে সরাসরি জড়িত, বাকিরা সহযোগিতা করেছে। সরাসরি জড়িতরা হলেন- সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়া। আর রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই আট আসামির সবাই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। ডিএনএ পরীক্ষাতেও নমুনার সঙ্গে মামলার আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা ডিএনএ নমুনার মিল পাওয়া গেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার সোহেল রেজা জানান, ৩৪৭ পৃষ্ঠার এ অভিযোগপত্রে ৪৯ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। এছাড়া, ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানের কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের আরেক মামলায় সাইফুর এবং মাহবুবুর রহমান রনিকে আসামি করে অপর একটি অভিযোগপত্রও আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকায় এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরদিন তার স্বামী শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। প্রতিবাদে সরব হয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও অধিকার সংগঠন। তদন্তে নেমে মোট আটজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আটজনের সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। সিলেটের ওই ঘটনার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনায় এ ধরনের অপরাধের শাস্তি বাড়ানোর দাবি আবারও আলোচনায় আসে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে টানা বিক্ষোভের মধ্যে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। পরে তা সংসদেও আইন হিসেবে পাস হয়। অবশ্য আগের আইনেও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ-ের বিধান ছিল।