প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৭ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য জাতিসংঘের পরিদর্শকদের দেওয়া প্রবেশাধিকার বাতিলের দাবি উঠেছে। গত রোববার দেশটির সব এমপির স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ অনুমতি বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদে হত্যাকান্ডের প্রতিক্রিয়ায় এমন আহ্বান জানালেন তারা। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।ইরানের সব এমপিদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ হত্যাকান্ডে খুনি ইহুদিবাদী সরকারের হাত স্পষ্ট।বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের কিছু সদস্য মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা ইরানকে একটি ‘স্বাভাবিক’ রাষ্ট্রে পরিণত করবে। তাদের এমন ক্ষতিকর চিন্তাভাবনা ইসরায়েলকে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করেছে।এমপিরা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের অন্যান্য মিত্রদের কাছ থেকে সন্ত্রাস ও নাশকতার যে অভিজ্ঞতা ইরানের হয়েছে দুর্ভাগ্যক্রমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার কোনও প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি। এসব ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমাদের কাছে কথিত স্বাভাবিক হওয়ার চিন্তাভাবনা কতটা ভুল ও বিপজ্জনক।এ হত্যাকান্ডের প্রতিশোধের দাবিতে তেহরানের রাস্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিক্ষোভ করেছে। একজন বিক্ষোভকারী সেখানে বলেছেন, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ক্ষমতার শেষ দুই মাসে একটা ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ তৈরি করতে চাইছেন। তবে ইরানের বাস্তববাদী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির কথাগুলো ছিল অবশ্য অনেক মেপে মেপে, হিসাব করে বলা। তিনি বলছেন, প্রতিশোধ নেওয়া হবে ঠিকই। কিন্তু হয়তো এক্ষুণি তা হবে না।ইসরায়েলের দিকে ইঙ্গিত করে রুহানি বলেন, ‘ইরান যথাসময়ে ব্যবস্থা নেবে, ফাঁদে পা দেবে না। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। কিন্তু আমরা তাদের হাতে কি তাস আছে তা বুঝে ফেলেছি। তারা সফল হবে না। কারণ, ইরান জানে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানের সঙ্গে সংঘাত নয় বরং সংলাপ চান।’ প্রশ্নটা সেখানেই। ইরান কেন এখনই কোনও পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছে না?
ইসরায়েল -যুক্তরার্ষ্টের ফাঁদ :বিবিসির বিশ্লেষক ও ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক এ্যালান জনস্টন বলছেন, এই সতর্কতার কারণ হলো, রুহানি মনে করেন যে ইসরায়েলের কট্টর যুদ্ধবাজরা এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলে ইরানের জন্য একটা ফাঁদ পেতেছে।এলান জনস্টন বলেন, ‘তারা (ইসরায়েল ও ট্রাম্প প্রশাসন) চাইছে, ইরান একটা ভুল পদক্ষেপ নিয়ে বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ুক।’ জনস্টন বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদের শেষ কয়েকটি সপ্তাহ চলছে এখন। এই সময়টাতে সম্ভবত রুহানি বড় ধরনের কোনও সংঘাত এড়াতে চাইছেন।