মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
কৃষকদের দিল্লি অবরোধের হুমকি
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:১৮ পিএম আপডেট: ০১.১২.২০২০ ১:৫০ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

গত শনিবার কৃষকদের মহাসড়ক ছেড়ে ময়দানে সরে গেলে আলোচনা হতে পারে বলে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শর্ত জুড়ে দেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঘোষণায় কৃষকদের ভেতরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ৩ ডিসেম্বরে সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি এখন অনেকটাই ঝুলে গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম থেকে বলা হচ্ছে। বর্তমানে কৃষকরা দিল্লির জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রয়েছেন। বিক্ষুব্ধ কৃষকদের এই অনড় অবস্থানের কারণে মোদি সরকারের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বলে সংবাদ মাধ্যম থেকে দাবি করা হয়েছে।


গত রোববার সরকারের এই প্রস্তাব খারিজ করে কৃষক সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, তারা সরকারের মর্জি মাফিক বুরারি ময়দানে সরছেন না। কারণ সেটা আসলে খোলা জেলখানা। তার বদলে দিল্লিতে প্রবেশের পাঁচটি রাস্তাতেই অবরোধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কৃষকরা। কৃষক নেতাদের দাবি, তাদের কাছে চার মাসের রসদ রয়েছে। নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার না-করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে পিছু হটবেন না। এর মধ্যেই গতকাল বিজেপি তথা মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে হরিয়ানার প্রভাবশালী খাপ পঞ্চায়েতগুলো ‘সব রকম ভাবে’ কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে। খাপের সদস্যরা গতকাল দিল্লির অভিমুখে যাত্রা করবে বলে জানিয়েছেন দাদরির বিজেপি সমর্থিত নির্দল বিধায়ক সোমবীর সাঙ্গোয়ান। একই সঙ্গে তিনি মোদি সরকারকে কৃষি আইন পুনর্বিবেচনার অনুরোধও জানিয়েছেন।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবকে অপমানজনক বলে উল্লেখ করে কৃষক সংগঠনগুলোর  নিজেদের ভেতরের আলোচনা সেরে নিয়েছে। বিদ্রোহী কৃষকদের মুখপাত্র ভারত কিসান ইউনিয়নের (ক্রান্তিকারী) সভাপতি সুরজিৎ সিংহ ফুল জানান, ‘সরকার যে ভাবে আলোচনার জন্য শর্ত রেখেছে, তাকে আমরা কৃষক সংগঠনের অপমান বলে মনে করি। আমরা কোনও ভাবেই বুরারি ময়দানে যাব না। ওটা আসলে মুক্ত জেলখানা। প্রধান পাঁচটি সড়ক অবরোধ করে দিল্লি ঘেরাও করব।’ কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাকে কৃষকদের মঞ্চে আসার অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান। হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে ঢোকার টিকরী ও সিংঘু সীমানায় কৃষকরা অবরোধ শুরু করেছেন। ফলে এক নম্বর জাতীয় সড়ক কার্যত বন্ধ। উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে ঢোকার গাজিপুর সীমানাতেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এর পরে চাষিরা আরও দুই সড়ক বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিলেও দেশটির সরকার এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড়। উল্টো গত রোববার রেডিওর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ‘দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পরে সম্প্রতি সংসদে পাশ হওয়া কৃষি সংশোধনী আইনের ফলে কৃষকরা শুধু শিকলমুক্ত হননি, নতুন অধিকার ও নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা এসে পৌঁছেছে তাদের হাতে।’ প্রধানমন্ত্রীর  এমন বার্তার পরেই কৃষক নেতারা বুঝে যান, মোদি সরকার কোনও ভাবেই আইন প্রত্যাহার করবে না। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরাও জানিয়ে দেন, চাষিদের স্বার্থেই কৃষি আইন আনা হয়েছে। তার বক্তব্য, ‘কৃষকদের সঙ্গে আমাদের তিন বার আমলা, মন্ত্রী স্তরে আলোচনা হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর ফের বৈঠক হবে, আগেই ঠিক ছিল। সরকার খোলা মনে কথা বলতে তৈরি। কিন্তু আলোচনার আবহ দরকার।’ সরকারের যুক্তি, সেই আবহ তৈরি করতেই চাষিদের জাতীয় সড়ক ছেড়ে ময়দানে সরে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কৃষক নেতারা মনে করছেন, বুরারি ময়দানে সরে গেলে সরকারের উপর থেকে চাপও সরে যাবে। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ এর আগে উত্তরাখ-ের কৃষকদের যন্তর মন্তরে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বুরারি ময়দানে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এটাই প্রমাণ করতে চাইছেন, শুধু পাঞ্জাবের চাষিরাই কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। বাস্তবে গোটা দেশের কয়েকশো সংগঠন এই আন্দোলনে যুক্ত। আজ সারা দেশেই বিক্ষোভ দেখানো হবে বলে বিক্ষুদ্ধ কৃষকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়। 

দেশের চলমান সংকট নিরসনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল গতকাল কন্দ্রের কাছে  একটিপ্রস্তাব পাঠিয়েছেন। কেজরীবালের প্রস্তাব, সরকার এখনই চাষিদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দম্ভ এখন স্পষ্ট। দিল্লির চারদিকে যখন লাখ লাখ কৃষক বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী কৃষি আইন নিয়ে অনড় মনোভাব দেখাচ্ছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১২০০ কিলোমিটার দূরে হায়দরাবাদে গিয়ে জনসভা করতে পারেন। কিন্তু ১৫ কিলোমিটার দূরে দিল্লির সীমান্তে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন না?’ চাষিদেরও দাবি, সরকার রাজনৈতিক স্তরে কথা না বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে কথা বলছে।

পাঞ্জাব থেকে দিল্লিতে আসার পথে হরিয়ানার একাধিক জায়গায় চাষিদের ঠেকাতে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিক্ষুদ্ধ কৃষকরা। হরিয়ানার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এম এল খট্টর গত রোববার দাবি করেছেন, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস বলপ্রয়োগ নয়। পাশাপাশি, এই কৃষক বিক্ষোভে রাজনৈতিক রং রয়েছে গত শনিবার দাবি করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। এসময় খট্টর  অমরেন্দ্র সিংহের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিযোগে সিলমোহর না দিয়ে অমিত শাহ গত রোববার হায়দরাবাদে ভোট প্রচারে গিয়ে জানালেন, এই বিক্ষোভে রাজনৈতিক ইন্ধন নেই।
সিল করা হল দিল্লির সীমানা :বিক্ষোভকারীরা দেশের রাজধানী অবরুদ্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতেই সিল করে দেওয়া হয়েছে রাজধানী দিল্লির সীমানা। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাও। কৃষক সংগঠনগুলো কেন্দ্রীয় আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর গত রোববার গভীর রাতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী ‘মন কি বাত’ বক্তৃতা থেকেও বার্তা দিয়েছিলেন কৃষকদের। কিন্তু কোনও কিছুতেই দমছে না বিক্ষোভ। গতকাল গুরু নানকের জন্মদিনেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি। বরং দেশের রাজধানীর সীমানায় কৃষকদের মিছিলের ভিড় যত লম্বা হচ্ছে ততই চড়ছে উত্তেজনার পারদ। গত সপ্তাহেই আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু তা খারিজ করে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বেগতিক দেখে গত রোববার গভীর রাতে নয়াদিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার বাসভবনে বৈঠক  করেন ধেমটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-ও। সূত্রের খবর, তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং দলীয় সভাপতির ওই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ৩ কৃষি আইনের প্রতিবাদে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত কতটুকু কাজে আসবে সেটি এখনও অনিশ্চিত।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]