২০১৭ সালে সাভারের একজন ব্যবসায়ী জামান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে আপিল বিভাগ বলেছিলো যাবজ্জীবন মানে ত্রিশ বছর নয়, আমৃত্যু কারাবাস।
কিন্তু পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদ নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হলে এ বিষয়ক একটি রিভিউ আবেদন হয় এবং ওই আবেদনের চূড়ান্ত রায়ে আপিল বিভাগ মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) বলেছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে ৩০ বছরের কারাদণ্ড।
রিভিউ আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেছেন, "আপিল বিভাগ শর্ট অর্ডারে বলেছেন বাংলাদেশের দণ্ডবিধি ও ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজার অর্থ হবে ত্রিশ বছর কারাদণ্ড। তবে কোনো নির্দিষ্ট আদালত বা ট্রাইব্যুনাল যদি কোনো ব্যক্তিকে আমৃত্যু কারাগারের আদেশ দিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির জন্য কোনো রেয়াত বা বেনিফিট প্রযোজ্য হবেনা। তাকে আমৃত্যুই কারাগারে থাকতে হবে। তবে সাধারণত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদ হবে ত্রিশ বছর"।
তিনি বলেন, আইনজীবী ও আইনজ্ঞদের মধ্যে এ নিয়ে যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছিলো তার প্রাথমিক সমাধান হলো যে ত্রিশ বছর ধরেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিষয়টি হিসেব করতে হবে।
তবে আমৃত্যু কারাগারের বিষয়টি কারাগারে কিভাবে মেনটেইন করা হবে তা নিয়ে পরে সরকারের দিক থেকে নির্দেশনা আসতে পারে, বলছিলেন তিনি।
মূলত ২০১৭ সালের আপিল বিভাগ জামান হত্যা মামলার আসামিদের সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে আমৃত্যু কারাবাসের কথা বলার পর আ ইনজীবীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
কারণ এর আগে সরকারেরই একটি সার্কুলারে কারাদণ্ডের মেয়াদ সর্বোচ্চ ত্রিশ বছর পর্যন্ত বলে বলা হয়েছিলো।
এসব নিয়ে বিভ্রান্তির জের ধরেই ব্যবসায়ী জামান হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আইনজীবীরা ২০১৭ সালের নভেম্বরে রিভিউ আবেদন করেছিলেন।
২০০১ সালে সাভারে জামান নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার দায়ে ২০০৩ সালে ঢাকার একটি আদালত কামরুল, আতাউর ও আনোয়ার নামের তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলো।
এর বিরুদ্ধে আতাউর ও আনোয়ার হাইকোর্টে আপিল করেছিলো।
পরে তাদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০০৭ সালে রায় দেয় হাইকোর্ট।
পরে এ রায়ের বিরুদ্ধেই আপিল করেন আসামী পক্ষ।
সে আপিলের ওপার শুনানি শেষ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে আপিল বিভাগ বলেছিলো যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস।