প্রকাশ: সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৯ পিএম আপডেট: ৩০.১১.২০২০ ১:২২ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর সচিবালয় এলাকা ও গুলিস্তানের ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। গতকাল ঢাকার ব্যস্ততম এসব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় পথচারী, দোকানদার, ব্যবসায়ী, বাসের যাত্রীদের মাস্ক না পরার অপরাধে জরিমানা করেন আদালত। অভিযানের পাশাপাশি ওই এলাকায় অসচ্ছলদের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হয়। এদের মধ্যে একজন পেশায় গাড়িচালক তাকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওই দল। প্রথমে তাকে মাস্ক না পরার বিষয়ে জানতে চাইলে সাজেদুল নানা ছুতো দেন। আদালতকে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মাস্ক ছিল। পরতে ভুলে গেছি।’ এ অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ১০০ টাকা জরিমানা করেন। একই অপরাধে জরিমানা গুণতে হয়েছে সোহেল রানাকেও। এই তরুণ পকেটে মাস্ক রেখে গুলিস্তান মোড়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন এক বন্ধুর সঙ্গে। তাকেও ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়। মাস্ক পরেননি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হোটেল থেকে নাশতা করে বেরিয়েছি। মাস্ক পরতে ভুলে গেছি।’ সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাইরে চলাচল করতে জোর দিচ্ছে। গত ২৫ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা পেতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। ১৮ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহানগরী ও জেলার পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাস্ক পরার বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া র্যাবের পক্ষ থেকেও অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তবু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মানুষের উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল কুমার হালদার। তিনি বলেন, অধিকাংশ মানুষের কাছেই মাস্ক থাকে। কিন্তু তারা মাস্ক পরতে চান না। মাস্ক না পরার বিষয়ে মানুষ গরম লাগে, ভুলে গেছি, একটু আগে পরা ছিল এসব বলে অজুহাত দেখান। মাস্ক পরার অভ্যাসটা বাড়ালে সবার জন্য উপকার হবে। তবে মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়ছে উল্লেখ করে উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, ‘গত সপ্তাহে পীর ইয়ামেনী মার্কেটে এসে আমি অভিযান চালিয়েছিলাম। পাঁচ থেকে সাতজন দোকানিকে মাস্ক ছাড়া পেয়েছিলাম। আজকে একই মার্কেটে এসে দেখলাম মোটামুটি সবাই মাস্ক পরেছেন।’ মাস্ক না পরার অপরাধে কাউকে ১০০ টাকা, কাউকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। জরিমানার বিষয়ে জানতে চাইলে এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, অপরাধের গুরুত্ব ও মাত্রা, সচেতনতার মাত্রা বুঝে জরিমানা করা হচ্ছে। একজন শিক্ষিত মানুষ অপরাধ করলে যে মাত্রায় শাস্তি হবে, একজন অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষ অপরাধ করলে সেই মাত্রায় শাস্তি হবে না। গুলিস্তানের ফুটপাতে মধু বিক্রেতা মো. ডালিমের মুখে কোনো মাস্ক ছিল না। ভ্রাম্যমাণ আদালত তার সামনে এলে তিনি দ্রুত পকেট থেকে বের করে মাস্ক পরেন। এ সময় আদালত তাকে জিজ্ঞেস করেন মাস্ক না পরার কারণ কী। তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরাই ছিল, একটু আগে খুলে রেখেছি।’ মাস্ক না পরার অপরাধে তাকে ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এর ঠিক দেড় ঘণ্টা পর ফুটপাতে মো. ডালিমের কাছে গিয়ে দেখা যায়, তিনি মাস্ক পরেছেন ঠিকই। কিন্তু সেটি তার থুতনিতে নামানো। জানতে চাইলে মো. ডালিম বলেন, গরমের কারণে মাস্ক নামিয়ে রেখেছেন।