প্রকাশ: সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০, ১১:৫৫ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ
অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ ঠেকাতে একমত হয়ে নতুন একটি চুক্তিতে সই করেছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। গত শনিবার স্বাক্ষরিত এই চুক্তিতে দেশ দুটি বলছে, তারা অভিবাসীদের প্রবেশ ঠেকাতে নতুন প্রযুক্তির পাশাপাশি সীমান্তে পুলিশি পাহারা জোরদার করবে।শুধু সাগর পথে নয়, কেউ যাতে কার্গো ট্রাকে চড়ে ইউরোপে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকেও কঠোর নজরদারি করবে এই দুই দেশ।
প্রতি বছর হাজার হাজার অভিবাসী ছোট ছোট নৌকায় চড়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করে। যদিও বেশিরভাগ অভিবাসীর সলিল সমাধি ঘটে সাগরে। তারপরও কমছে না উন্নত জীবনের আশায় সাগর পাড়ি দেয়ার ঘটনা। ফলে প্রতি বছরেই দীর্ঘ হচ্ছে সাগরে অসহায় মানুষের মৃত্যুর মিছিল।যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব প্রীতি পাটেল বলেন, ‘ফ্রান্স সৈকতে আরও বেশি বর্ডার গার্ড মোতায়েন করা হবে। পাশাপাশি সাগরে অভিবাসীদের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য ড্রোন ও রাডার ব্যবহার হবে।’তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে আমরা ইতোমধ্যে দেখতে পাচ্ছি যে, ফ্রান্সের সৈকতগুলোতে অভিবাসীর সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। আর কেউ এলেও মূল ভূখন্ডে আর প্রবেশ করতে পারছে না।’পাটেলের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেন, ‘আমরা চাই এই রাস্তা ব্যবহার করে আর কোনো অভিবাসী ফ্রান্সে প্রবেশ না করুক।’তবে তাদের এই চুক্তিকে খুবই হতাশাজনক বলে আখ্যায়িত করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ‘অবৈধ অভিবাসী ঠেকানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো তাদের জন্য যুক্তরাজ্যে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ নেয়ার পথটি সহজতর করা। এইভাবে বর্ডার বন্ধ করা কখনো ভালো উপায় হতে পারে না।ডিটেন্টশন অ্যাকশন চ্যারেটি নামে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনও এই চুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছে। সংগঠনটির পরিচালক বেলা সানকি বলেন, ‘নিরাপদ ও বৈধ রাস্তা বের করাই হলো অবৈধ অভিবাসী ঠেকানোর প্রধান উপায়। এভাবে পুলিশি পাহারার মাধ্যমে সীমান্ত বন্ধ করার কোনো সার্থকতা নেই।’যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র সচিব পাটেল জানিয়েছেন, রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ার জন্য আগামী বছর নতুন একটি আইন পাস করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য।
পরিসংখ্যান বলছে, চলতে বছরে ফ্রান্স সরকার প্রায় ৫ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে সীমান্তে আটক করেছে। অবৈধ অভিবাসী ঠেকানোর জন্য গেল ১০ বছরে ফ্রান্সকে ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়েছে যুক্তরাজ্য।