প্রকাশ: সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০, ১১:৪৮ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ
কাতারের ক্লাব পর্যায়ের দলের কাছে হারার পর দ্বিতীয় শ্রেণির দলের বিরুদ্ধে সেই একই হাল জামাল ভূইয়াদের। হারতে হারতে তারা প্রস্তুতি ম্যৗাচ শেষ করে এখন ৪ ডিসেম্বর বাঘের সামনে পড়ার অপেক্ষায়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই হাল প্রমাণ করে দেয় আমাদের ফুটবল কোন তিমিরে অবস্থান করছে। কেবল কথার মালা সাজিয়ে আমাদের ফুটবল কর্তৃপক্ষ ঠান্ডা ভাতে বাতাস দিয়ে চলেছেন। যদি কাতারের কোন নামকরা দলের সঙ্গে এই ফলাফল হতো সেটি মেনে নেওয়া খুব একটা কষ্টের ছিল না। কিন্তু যখন ক্লাব পর্যায়ের দল বা দ্বিতীয় শ্রেণির দলের কাছে জাতীয় দল হেরে যায় তখন অনেক প্রশ্ন ফুটবল প্রেমিদের মনকে ভরাক্রান্ত করে।যদিও অতি সম্প্রতি ফিফা র্যাঙ্কিংএ আমাদের তিন ধাপ উন্নতি ঘটেছে। কিন্তু বাস্তবতায় আমরা আরও নিজের দিকেই নেমে যাচ্ছি। সত্যি কথা বললে বলতে হয়, বাংলাদেশের ফুটবল অস্তাচল গামী! যদিও ফুটবলের জন্য রয়েছে ফেডারেশনের মত একটি আলীসান হাউজ। যাকে ফুটবলের ‘হোয়াইট হাউস’ বলা যেতে পারে। সেখানে প্রতি বছরই জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে। এলাহী খানা পিনাও চলে। তবে চলে না ফুটবলের উন্নতিতে আগামীর করণীয়। বেশ কয়েক ট্রামে ভবনটির নিতৃত্বে রয়েছেন এককালের দেশসেরা ফুটবলার কাজী সালউদ্দিন। যিনি তুর্য নামেও নিকট জনের কাছেপরিচিত। সেই তিনিও ফুটবলের এই দৈন্য দশা থেকে উদ্ধারের কার্যকর কোন পথ বাতলে দিতে সক্ষম হননি। কেবলই আশ^াস আর প্রত্যাশার বাড়াবাড়ি। বিদেশি কোচ বিদেশি স্টাইল সব কিছু ফুটবলে প্রচলন করা হয়েছে এমন তৃপ্তি দায়ক কথাবার্তা শুনা গেলেও কাজের কাজ কতটুকু হয়েছে তা এই ফলাফল থেকে স্পষ্ট। প্রস্তুতি ম্যাচ প্রকৃতপক্ষে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার উপলক্ষ্য, নিজেদের বাজিয়ে দেখার সুযোগ। সেদিক দিয়ে চিন্তা করলে কাতারে গিয়ে খেলা দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশ দলের কোনও ক্ষতি-বৃদ্ধি হয়নি।তবে যেকোনও অবস্থায়, যেকোনও দলের বিপক্ষে জয় মনোবল বাড়ায়, বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগায়। সেটি ধরলে শনিবার লুইসাইল স্পোর্টস ক্লাবের কাছে ১-০ গোলে পরাজয়ে জামালদের মন খারাপ হওয়ার কারণ থাকেই। তাছাড়া প্রথম ম্যাচে শৌখিন দল কাতার আর্মির কাছে ৩-২ গোলে হারের পর এ ম্যাচে ভালো খেলার প্রতিশ্র“তি ছিল বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের মুখে। লুসাইল অবশ্য পেশাদার দল, তবে খেলে দ্বিতীয় বিভাগে। কাতার এশিয়া চ্যাম্পিয়ন, ২০২২ বিশ্বকাপের স্বাগতিক। সেই দেশটির দ্বিতীয় বিভাগের একটি দলও যে কতটা শক্তিধর সেটা বুঝতে পারলেন জামাল-জীবন-সুফিলরা!
ভেন্যু দোহার আল আজিজিয়া বুটিক সুপার ক্লাব মাঠ। লুসাইল এগিয়ে যায় আবদুল রহমান মোসেদের ২৪ মিনিটে দেওয়া গোলে। এরপর আর কোনও দলই গোল করতে পারেনি। বাফুফের মিডিয়া উইং এ ম্যাচের যেসব ছবি পাঠিয়েছে তাতে বাংলাদেশ দলের কয়েকটি আক্রমণের মুহূর্তও আছে। সুফিল-ইব্রাহিমদের দেখা গেছে আক্রমণে উঠতে। শেষ পর্যন্ত সেসব আক্রমণ যে পরিণতি পায়নি তা তো বলে দেয় স্কোরলাইন।
ম্যাচের পর ভিডিও বার্তায় গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো বলেছেন, দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে হারলেও দল ৪ ডিসেম্বর কাতারের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ভালো খেলতে চায়। দুটি ম্যাচে যেসব ভুলত্রুটি হয়েছে সেগুলো শুধরে নিয়েই সবাই মাঠে নামতে উন্মুখ। বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমিরা এই কথার উপর আস্থা রেখে দল বিজয়ী হোক সেই প্রত্যাশা করছে।