প্রকাশ: সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০, ২:৩৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে বিশাল বিশাল অসংখ্য চর জেগে ওঠায় স্থানীয় নৌ-রুট বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া নদীতে চর জেগে ওঠার কারনে উপজেলার মূল ভ’খন্ড ভাংঙনের কবলে পড়ে ইতিমধ্যে বাশবাড়িয়া,হাজিরহাট,আউলিয়াপুর ও সৈয়দ জাফর এলাকার কয়েকশো একর ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
দশমিনা উপজেলার পশ্চিমে চরবাশবাড়িয়া ও দক্ষিনে চরফাতেমার মধ্যে তেতুলিয়ার বুকচিরে জেগে উঠেছে চরআজমাইন, দশমিনার হাজির হাট লঞ্চঘাট ও চর বাশবাড়িয়ার অংশে তেতুলিয়ার বুকচিরে জেগে উঠেছে চর আদিব। চরহাদীর উত্তর পাশে জেগে উঠেছে লালচর, পশ্চিমে জেগে উঠেছে চরকাউয়া ও চরশাহজালালের পশ্চিমে চরসামাদ সহ অসংখ্য চর জেগে ওঠায় এক সময়ের খড়াস্রোতা তেতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় নদী তীরবর্তী জেলে পল্লীসহ নৌ-চলাচলে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তা। শুকনো মৌসুমে পানি কমে গেলে নদী দুটির অবস্থা আরো প্রকট আকার ধারন করে।
উপক’লীয় এলাকার সড়ক যোগাযোগ ভাল না থাকায় মানুষ বানিজ্যিক ও যাতায়াত মাধ্যম হিসেবে নদী পথকে বেছে নেয়। উপক’লীয় এলাকা থেকে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ছোট বড় লঞ্চ ঢাকা,বরিশাল সহ-দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে। বিলাসবহুল এ্যাডভেঞ্চার-১১ লঞ্চের সুপারভাইজার নয়ন হোসেন জানান, তেতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের কারনে পাচ ঘন্টা অতিরিক্ত সময় লঞ্চ চালিয়ে গন্তব্য স্থানে পাড়ি জমাতে হচ্ছে। এছাড়া ভাটার সময় ডুবোচরে ঘন্টার পর ঘন্টা লঞ্চ আটকে থাকে এতে যাত্রীদের চরম দূভোর্গ পোহাতে হয়।
নদী দুটোতে চর জেগে ওঠার কারনে আগের নৌ রুট প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া নদীর ৮০ শতাংশ এলাকা জুরে অসংখ্য ভাসমান ও ডুবচর থাকায় বাশেঁর লগি দিয়ে পানি মেপে লঞ্চের গতিপথ নির্ধারন করতে হচ্ছে। এ কারনে যেকোন মূহুর্তে নৌ-দূর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। নদীর গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় এক সময়কার ইলিশ মাছ খ্যাত তেতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদী তার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য হারাচ্ছে। নদীতে ড্রেজিং না করার ফলে প্রতি বছরই শত শত টন পলি এসে নদী তলদেশে জমা হওয়ায় তেতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে তেতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে ড্রেজিং না করালে দশমিনা,বাউফল, গলাচিপা ও ভোলার লালমোহন, চরফ্যাশনের সংঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে অনিশ্চয়তা নেমে আসতে পারে উপক’লীয় হাজার হাজার জেলে পরিবারে। দশমিনা উপজেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ নুরুল হক হাওলাদার জানান, নদী দুটিতে অতি দ্রুত ড্রেজিং না করালে উপক’লীয় এলাকার হাজার হাজার জেলে বেকার হয়ে অনিশ্চয়তা নেমে আসতে পারে তাদের পরিবারে।
পটুয়াখালী নদী বন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদেকুর রহমান জানান, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে আবেদন করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য এস,এম শাহজাদা এমপি জানান, পায়রা সমুদ্র বন্দরের সাথে তেতুলিয়া ও বুড়া গৌরাঙ্গ নদীর সংযোগ চ্যানেল থাকায় বর্তমান সরকার নদী দুটো দ্রুত ড্রেজিংয়ের আওতায় আনবেন।
তিনি জানান, নদী দুটো সচল রাখার জন্য দশমিনার মূল ভ’খন্ড থেকে চরাঞ্চলে নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুত না নিয়ে ভোলার চরফ্যাশন থেকে দশমিনার চরাঞ্চলে বিদ্যুত সংযোগের ব্যাবস্থা করা হচ্ছে॥