প্রকাশ: রোববার, ২৯ নভেম্বর, ২০২০, ১:৪৮ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
সারাদিন চুপ ছিলেন অভিনেতা-প্রযোজক ইরেশ যাকের। তবে তার এই নীরবতা একজন বাবাহারা সন্তান হিসেবে। বাবা আলী যাকেরকে সর্বোচ্চ মমতা দিয়ে শেষ বিদায়ের কাজটি দিনভর করেছেন আপন মনে।শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বনানী কবরস্থান থেকে ফিরতি পথে জানালেন মনের কিছু কথা। সবার উদ্দেশে বললেন, ‘বন্ধুরা আমার জন্য দুঃখ করবেন না। কারণ, আমি বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ। বাবার সঙ্গে শেষ ৮ মাস একটানা কাটিয়েছেন। গল্পটি শোনালেন এভাবে, ‘নিজ নিজ ব্যস্ততার কারণে এত লম্বা সময় আমাদের একসঙ্গে থাকার সুযোগ ছিল না। অথচ শেষ আট মাস আমরা একই বাড়িতে একসঙ্গে কাটিয়েছি। এরমধ্যে আমরা নিজের গ্রাম রতনপুরে দুবার যেতে পেরেছি। যা আমরা আগে কল্পনাও করতে পারতাম না। আমরা টানা এক মাস প্রতিদিন একসঙ্গে আইপিএল দেখার সুযোগ পেয়েছি। এটাও অবিশ্বাস্য।’ স্মৃতিকাতর শৈশবের কথা টেনে ইরেশ বলেন, ‘ছোটবেলায় শিশুরা যেমন করে, আমরা তেমন আনন্দ করেছিলাম শেষ কয়েক মাস। এবং এই সুযোগে বাবার ছবি তোলার সময় ও আনন্দ পেয়েছিলাম। সবচেয়ে বড় কথা, ৪৪ বছরের এই জীবনে আমি সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তির সন্তান হতে পেরেছি। এটা আমার কাছে সবচেয়ে আনন্দের বিষয়।’ এজন্যই ইরেশ যাকের সেই আনন্দ থেকে নিজেকে আর বঞ্চিত করতে চান না। অনুরোধ, ‘তার (আলী যাকের) এই অনুপস্থিতির জন্য আমি কষ্ট পাচ্ছি, তবে আমার জন্য কেউ দুঃখ করবেন না। কারণ, আমি বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ।’ দুদিন আগে করোনা পজিটিভ, তারও চার বছর আগে ক্যানসার বাসা বেঁধেছিল একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আলী যাকেরের সুঠাম শরীরে। সেই সূত্রে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শব্দসৈনিক।একই দিন বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয় তার। তারও আগে দুপুরে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে তাকে জানানো হয় গার্ড অব অনার ও ফুলেল শ্রদ্ধা।