বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
রাজধানীর খাল ব্যবহৃত হোক ঢাকাবাসীর স্বার্থে
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২১ পিএম আপডেট: ২৮.১১.২০২০ ৩:২৬ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

রাজধানীর জলাবদ্ধতা দূর করতে সরকার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে এবার আশা করা যায়, রাজধানীবাসী জলজট-যানজট থেকে মুক্তি পাবে। রাজধানীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় ৩০ বছর ধরে দুর্বলতার ছাপ স্পষ্ট অতীতে কাগজে কলমে নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নতি করার বহু চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু সাফল্যের মুখ সেভাবে দেখেনি। এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানী পানির নিচে তলিতে যায়। আর ভারী বৃষ্টি হলে পানিতে থই থই করে মহাসড়কগুলো। এসময় রাজধানীবাসীকে অফিস-আদালত ও প্রয়োজনীয় কাজকর্মের জন্য নোংরা পানি মাড়িয়েই চলাচল করতে হয়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণেই এমনটি হয়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অস্বাভাবিক থাকার মূল কারণ রাজধানীর খালগুলো অবৈধ দখলদারের কবলে। আবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ময়লা-আবর্জনার স্তূপ এড়ানো গেলে জনদুর্ভোগ একেবারেই থাকত না।

রাজধানীতে অনেকগুলো খাল আছে। তার মধ্যে কতগুলো খাল অবৈধ দখলদাররা দখল করে বিশাল স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এই খালগুলো উদ্ধারের কথা কিছুকাল আগে শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত সে উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি বা শেষের কোন খবরও ঢাকাবাসী জানতে পারেনি। এসব থেকে সন্দেহ জমছে তাহলে কি রাজধানীতে সরকারি খালগুলো উদ্ধারের পরিকল্পনা থেকে কর্তৃপক্ষ পিছটান দিয়েছে? যদিও এ ব্যাপারে সঠিক কোনো তথ্য কোন মাধ্যম থেকে মেলেনি বা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আমাদের কথা, অবৈধ দখলে চলে যাওয়া সেই খালগুলো সরকার যে কোনো মূল্যে উদ্ধার করবে। বিশ্বনেতা-রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাজধানী ঢাকাকে বিশ্বের মধ্যে উন্নত ও বৈশিষ্টপূর্ণ রাজধানী হিসেবেই দেখতে চান। নগরবাসীর সব ধরনের দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করতে চান। এ জন্য তিনি রাজধানীর যানজট লাঘবে মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। যার অনেকটাই এখন দৃশ্যমান। রাজধানীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি করা গেলে অল্প বৃষ্টিতেই রাজধানী তলিয়ে যাবে না বা ভারী বৃষ্টিতেও মানুষের কোন দুর্ভোগ হবে না। 

রাজধানীর যে খালগুলো আছে, বর্তমানে এগুলোর দেখভালের দায়িত্বে আছে ঢাকা ওয়াসা। আগে অবশ্য ঢাকা সিটি করপোরেশনের হাতেই ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এগুলোর দেখভালের দায়িত্ব চলে যায় ঢাকা ওয়াসার হাতে। ঢাকা ওয়াসা খালগুলোর পানি প্রবাহ নিষ্কণ্ঠক করতে অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে।  উপরোন্ত ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করে তা অবৈধ দখলদারদের হাতে তুলে দেওয়ার কর্মটি পিছন থেকে ভালোভাবেই সেরেছে। ময়লা-আবর্জনা ফেলে এর অস্তিত্বই বিপন্ন করে তোলা হয়েছে। অথচ খালগুলো যথাযথ রাখার জন্য সরকারের কোষাগার থেকে প্রচুর অর্থ লোপাট হয়েছে। সেই অর্থ খালের রক্ষণাবেক্ষণে কতটা কার্যকর হয়েছে সেটিও প্রশ্নবোধক?। বরং অভিযোগ রয়েছে, খালের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ সরকার দিয়েছে, তার প্রায় পুরোটাই রক্ষণাবেক্ষণকারীদের পকেটে গেছে। ওয়াসা যে শেষ পর্যন্ত রাজধানীর খাল রক্ষণাবেক্ষণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ তা প্রমাণ হয়ে গেছে। এই খালগুলোর গভীরতা যথাযথ রাখা গেলে, বৃষ্টির পানি গিয়ে পড়তো এই খালগুলোতে, খালগুলোর পানি ধারণের সেই সক্ষমতা ছিল। কিন্তু সেই সক্ষমতা বহু আগেই নষ্ট করে দেওয়া হয় আবর্জনা-ময়লা ফেলে। যাই হোক রাজধানীর জলজট থেকে রাজধানীবাসীকে মুক্তি দিতে খালগুলো দেখভালের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হয় ঢাকার দুই সিটির মেয়রদ্বয়। মেয়র দ্বয়ের আগ্রহকে যথাযথ সম্মান দেখাতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

অনেকে ভেবে চিন্তে শেষ পর্যন্ত রাজধানীর খালের দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্তে পৌঁছান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। এ ব্যাপারে গতকালের দৈনিক পত্রিকাগুলোর প্রতিবেদনের খবর থেকে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ লক্ষে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, এক সময় খালের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতেই ছিল এবং আইনেও তাই আছে। পরে কোনো এক সময়ে রাষ্ট্রপতির আদেশে সেটি ঢাকা ওয়াসার হাতে দেওয়া হয়। এখন দুই সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র খালের দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ওয়াসা থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে খালগুলো হস্তান্তরের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঢাকা শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সংস্কারসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে এতদিন ওয়াসা দায়িত্ব পালন করেছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর দুই সিটি করপোরেশন তা করবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য জনবল, যন্ত্রপাতিসহ সবকিছুই সিটি করপোরেশনের কাছে রয়েছে, তাদের সক্ষমতা আছে। পৃথিবীর আধুনিক শহরে ইউটিলিটিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার জন্য পাইপলাইন স্থাপন করতে হয়। সময় সময় ক্যাপাসিটির জন্য পরিবর্তনও করতে হয়। এ সমস্যা সমাধানে মেয়রসহ বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

রাজধানীর খালের দায়িত্ব ঢাকার দুই সিটি মেয়রকে দেওয়ায়, মেয়রদ্বয় রাজধানীর খালগুলোকে যথাযথভাবে ঠিক রেখে পানি নিষ্কাশনে একে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। খালের দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই দিনটি ঐতিহাসিক। আমরা দুই সিটির মেয়র চেয়েছিলাম ঢাকা শহরের খালগুলো আমাদের আওতায় নিতে। রাজধানীতে জলাবদ্ধতা নিয়ে যে দুর্ভোগ রয়েছে, জনগণকে এই জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার জন্য চেষ্টা অব্যাহত থাকবে’। অন্যদিকে দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যা নিরসণে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ঢাকাবাসী দুর্ভোগে ছিল। ঐক্যবদ্ধভাবে দুই সিটি করপোরেশনের কাজের মাধ্যমে অচিরেই ঢাকাবাসীকে এর সুফল দেওয়া সম্ভব হবে’। পরিশেষে আমি বলতে চাই, ঢাকার মেয়রদ্বয়ের ওপর রাজধানীর খালগুলোর দায়িত্ব অর্পণ করাকে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখতে চাই। মেয়র আতিক ও তাপস, দু’জনই যোগ্যতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ। নগর পিতা হিসেবে তারা নগরবাসীর সুখ-দুঃখের কথা সারাক্ষণভাবেন। তারা খাল হাতে পেয়ে একে রাজধানীবাসীর গলার ফাঁস জলজট থেকে মুক্ত করতে যথাযথ কাজে লাগাতে পারবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]