অনলাইন শিক্ষা কখনোই শ্রেণিকক্ষের বিকল্প হতে পারেনা: ড. মো: নূরে আলম আবদুল্লাহ
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২০, ১০:২৬ পিএম আপডেট: ২৭.১১.২০২০ ১০:৩৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বর্তমানে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে স্থগিত রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। যদিও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরকার যতটা সম্ভব শিক্ষার্থীদের বইমুখী রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু দ্রুত এ সংকটের মোকাবিলা করতে না পারলে শিক্ষাব্যবস্থা পিছিয়ে পড়বে। এ বিষয়ে অতি দ্রুত এবং বিকল্প কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া না গেলে শিক্ষাব্যবস্থায় এক অদৃশ্য বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তাই করোনা পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে সরকার।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৭১ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: নূরে আলম আবদুল্লাহ, জার্মান আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা হাফিজুর রহমান আলম। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ড. মো: নূরে আলম আবদুল্লাহ বলেন, ১৬মার্চ সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ঘোষণা দেন এবং সেটা ২২ মার্চ থেকে কার্যকর হয় এবং পুরো দেশে লকডাউন অবস্থায় চলে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মত অবস্থা তখনো ছিলোনা এখনো নেই কারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি করোনা সংক্রমণ আরও বাড়ছে। আমার আগের বক্তা তার বক্তব্যে বলেছেন, বিশ্বের অনেক দেশেই এই করোনার সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছিল এবং পরে তার ফলাফল খারাপ দেখে তা পুনরায় আবার বন্ধ ঘোষণা করেছে। এই ক্ষেত্রে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার মত কোন কাজ করেননি কারণ আমরা একটি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছি শিক্ষা নিয়ে। অনলাইন শিক্ষার দ্বারা আমাদের সমাজে একটা ব্যাপক বৈষম্য তৈরি হয়েছে। কিভাবে সেটি আমি বলছি। আমরা যারা শহরে আছি, আমার নিজের সন্তানরাও অনলাইনে ক্লাস করছে। আমাদের শিখকদেরও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার মত প্রযুক্তি আছে। কিন্তু আমরা যদি একেবারে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো সেখানে শিক্ষকদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার মত পর্যাপ্ত ফ্যাসিলিটি নাই তার কাছে। আবার সেদিকে শিক্ষার্থীর দিকে তাকালেও দেখতে পাবো, গ্রামে বেশিরভাগ পরিবারের মধ্যে তার ছেলে-মেয়েকে স্মার্ট ফোন দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্যও চালু করা হয়েছে টিভিতে সীমিত আকারে পাঠদান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও টিভিতে প্রাথমিকের ক্লাস চালু করেছে। যদিও প্রান্তিক জনপদে টিভি না থাকারও একটা বিষয় আছে এখানে। আবার যাদের টিভি আছে তারাও মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সঠিকভাবে ক্লাসে যোগদান করতে পারছে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি অনুমোদন নিয়ে ‘জুম’ অ্যাপস ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে সীমিত আকারে তাদের পাঠ ও পঠন চালু করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফলে গ্রামে গঞ্জে অনলাইনে শিক্ষা ব্যবস্থা তেমন আশাতীত ভূমিকা রাখছে না বললেই চলে। তাই আমি আপনাদের মত একমত যে, তাই আমার কাছে অনলাইন ক্লাস শ্রেণিকক্ষের বিকল্প কখনোই হয়ে উঠতে পারে না।