জামালপুরের বকশীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সন্তান হিসেবে চাকরি নেয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে শিক্ষা অধিদফতর।
বরখাস্ত হওয়া দুইজন হলেন- টুপকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসরিন আক্তার ও খেয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাপলা আক্তার।
২৭ অক্টোবর তাদের বরখাস্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, নাসরিন আক্তার রবিয়ার চর গ্রামের বাসিন্দা ও মাদারের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আলমের স্ত্রী। আর আশরাফুলের খালাতো বোন শাপলা। আশরাফুল বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমানের ছেলে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি স্ত্রী নাসরিন ও খালাতো বোন শাপলাকে সহিদুর রহমানের নিজের সন্তান হিসেবে দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়ে দেন।
এ বিষয়ে নিয়ে ‘বউকে আপন বোন বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি’ শিরোনামে চলতি বছরে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সে সময় শাপলা আক্তার বলেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার চাকরি হয়েছে কি না, তিনি জানেন না। আশরাফুল তার চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। এ জন্য ১০ লাখ টাকাও নিয়েছেন। আশরাফুল ও নাসরিন ভাই-বোন নন, স্বামী-স্ত্রী।
সংবাদটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নজরে আসে। এরপর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়কে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। ১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক। এর ভিত্তিতে ২৭ অক্টোবর নাসরিন ও শাপলাকে বরখাস্ত করে শিক্ষা অধিদফতর। বিভাগীয় অভিযোগ আনা হয় আশরাফুলের বিরুদ্ধেও।
জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, তদন্তে জালিয়াতি করে চাকরি নেয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। ওই দুইজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে চাকরিতে যোগ দেয়ার পর থেকে সরকারি বেতন-ভাতা বাবদ নেয়া সব অর্থ ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এ–সংক্রান্ত চিঠি ওই দুইজনের কাছে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে বারবার চেষ্টা করেও অভিযুক্ত আশরাফুল, তার স্ত্রী নাসরিন ও খালাতো বোন শাপলার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।