প্রকাশ: শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২০, ৬:২৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কলেজছাত্র তানভীর আহমেদ জিসান হত্যার মানিকগঞ্জের শিবালয় থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া ও প্রেমিকা ব্রেকআপ করায় বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে জিসানকে খুন করে রাব্বি নামে এক বন্ধু। এরপর হাত-পা বেঁধে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
শুক্রবার ( ২৭ নভেম্বর ) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন মানিকগঞ্জের এডিশনাল এসপি (শিবালয়-সার্কেল) তানিয়া সুলতানা।
গ্রেফতাররা হলেন- শিবালয় উপজেলার দক্ষিণ পাচুরিয়া গ্রামের আসাদুর রহমানের ছেলে মো. রাব্বি হোসেন ওরফে প্রান্তিক, পূর্ব ঢাকাইজোড়া গ্রামের শামীম শেখের ছেলে হাসিবুল হাসান, ছোট শাকরাইল গ্রামের জামাল মোল্লার ছেলে আজিজুল মোল্লা, ঝড়ু মোল্লার ছেলে মো. নাজমুল ইসলাম ও সমেজ মোল্লার ছেলে শরিফ হোসেন।
শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবির বলেন, আসামিরা সবাই শিক্ষার্থী। তাদের সনদর যাচাই-বাছাই করে বয়স নিশ্চিত করা হবে।
এডিশনাল এসপি তানিয়া সুলতানা বলেন, ঢাকার মোহাম্মদপুর হাজী মকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ জিসান ১৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ১৮ নভেম্বর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে নদীতে ভাসমান এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় ময়নাতদন্তের পর আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়। দুইদিন আগে জামা-কাপড় দেখে ওই মরদেহ জিসানের বলে শনাক্ত করেন স্বজনরা। এরপর হত্যার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে আজিজুল ও হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী রাব্বিসহ বাকিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিসানের বাবা শাহীন আলম মামলা করেছেন। শুক্রবার দুপুরে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, আসামি রাব্বি হোসেন এক সময় মোহাম্মদপুরে থাকতেন। সেখানে জিসানের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। জিসানের এক বান্ধবীর সঙ্গে রাব্বির প্রেম ছিল। একদিন জিসানের সহযোগিতায় রাব্বি তার প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে যান। তখন কয়েকজন যুবক তাদের আটক করে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেন। ঘটনার কিছুদিন পর প্রেমিকার সঙ্গে রাব্বির ব্রেকআপ হয়। এরপরই তার সন্দেহ হয়- ছিনতাই ও ব্রেকআপের ঘটনায় জিসান জড়িত। এজন্য জিসানের প্রতি ক্ষোভ তৈরি হয় রাব্বির। তিনি বাকি বন্ধুদেরও বিষয়টি জানান। পরে সবাই মিলে জিসানকে ডেকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে।
এডিশনাল এসপি তানিয়া আরো বলেন, জিসানেরও এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম ছিল। ওই মেয়ের বড় বোনের বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয়ে। পারিবারিক এক অনুষ্ঠানে মেয়েটি বাড়িতে গেলে রাব্বি ফোন করে জিসানকেও সেখানে যেতে বলেন। ১৫ নভেম্বর শিবালয়ে গিয়ে রাব্বি ও তার বন্ধুরা নদী দেখার কথা বলে জিসানকে নদীর পারে নিয়ে যায়। এরপর পেছনে হাত বেঁধে পেটে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে তারা। ঘটনাস্থলেই জিসানের মৃত্যু হলে তারা মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।