#করোনা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট নিয়ে রিসার্চ হলে শেখ হাসিনার নাম সেখানে লেখা হবে: আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার।
#করোনার মধ্যেও শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় রপ্তানি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে: সিদ্দিকুর রহমান।
#শেখ হাসিনার জন্য নিজেকে বাঙালি বলতে এখন গর্ববোধ করি: আব্দুল্লাহ আল বাকি।
প্রকাশ: বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৩৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আমাদের দেশে করোনার অফিসিয়াল অস্তিত্ব ধরা পড়ার পর থেকে পার হতে চলেছে প্রায় ১০ মাস। প্রথম দিকে এটা নিয়ে যতটা আতঙ্ক এবং ভোগান্তি ছিলো সেটা এখন অনেকটা কেটে গেছে। এই করোনার মধ্যেও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনায়োকচিত গুণে দেশ আজ অবিরাম গতিতে মানবকল্যাণের সঙ্গে জনজীবন সম্মুখপানে এগিয়ে চলেছে। জ্যোতির্ময় গুণাবলীর অধিকারী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি দেশের অর্থনীতিকে নত হতে দেননি। তার নেতৃত্ব করোনা জয়ের পথে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৬৯ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বুধবার (২৫ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, এফবিসিসিআই এর সহ- সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকি। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার বলেন, আমি বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধা জানাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, গভীর শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করছি ১৫ই আগস্টের সেই কালো রাতে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা সহ মুজিব পরিবারের যেসব সদস্যরা শাহাদাৎ বরণ করেছিলেন। গভীর শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করছি ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ ইজ্জত হারা মা বোনদের। গভীরভাবে স্মরণ করি জাতীয় ৪ নেতাকে যাদের নেতৃত্ব আমরা মহান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। একটি বিধ্বস্ত দেশ, সাড়ে ৭ কোটি মানুষ, ৪৮৬ কোটি টাকার বাজেটকে কিভাবে তিনি শুরু করেছিলেন এই দেশের উন্নয়নের যাত্রা। শুধু এইটুকুই চিন্তা করলেই হবে, আর কিছু চিন্তা করা লাগবে না। বিশ্বের এমন কোন নেতা আছে যাকে সেই ১৯৭১ সালে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয় একটি বিধ্বস্ত দেশে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ, ৪৮৬ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে দেশ পরিচালনা করার। বঙ্গবন্ধু যদি সেদিন সময় মত ফিরে না আসতেন আমরা সেসময় কয়েক কোটি লোক না খেয়ে মারা যেতাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন- বাংলাদেশ একদিন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে ২০ বছর মেয়াদী একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেক চড়াই উৎরাই এর পড়ে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা আজকে দেশের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছেন। মানুষের জন্য রাজনীতি কি এটা তিনি জন্মলগ্ন থেকেই নিজ ঘর থেকে শিক্ষা লাভ করেছেন। এরপর ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তাকে বিদেশ থেকে দেশে প্রত্যাবর্তনের পরে এইদেশের হাল আবার তুলে ধরার জন্য তাকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়া হলো। আজকে সেই বাংলাদেশ কোথায়। আজকে বাংলাদেশ নতুন স্বপ্ন দেখে। এই করোনা মহামারীর মধ্যে সারা বিশ্ব যেমন থমকে গিয়েছে আমরাও কিন্তু আঘাত প্রাপ্ত হয়েছি। তারপরেও বলবো, এই করোনার শুরুতে আমাদের নেত্রী যে কথা বলেছিলেন বিশ্বের অনেক নেতাই এই কথাটি বলেননি। তিনি বলেছিলেন, করোনা শেষ হলে বিশ্বে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে, তাই আমাদের যেখানেই জমি সেখানেই ফসল ফলাতে হবে। নেত্রীর এইযে চিন্তা, এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয় আমরা গত বছরের তুলনায় আমরা এই বছর অধিক ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নো মাস্ক নো সার্ভিস। এটা একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। আমি আমাদের কুমিল্লায় বলেছিলাম নো মাস, নো এন্ট্রি। করোনা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট নিয়ে রিসার্চ হলে বাংলাদেশের নাম সেখানে লেখা থাকবে, শেখ হাসিনার নাম সেখানে থাকবে।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই যে আমরা ডিজিটালাইজেশনের একটা অনন্য দ্বার উন্মোচন হয়েছে দেশে এর মাধ্যমে করোনার মধ্যেও আমরা দেশ-বিদেশের দূর দূরান্ত থেকে একে অন্যের সাথে এভাবে যোগাযোগ করতে পারছি, সংলাপে অংশগ্রহণ করতে পারছি। আমি আমার বক্তব্যের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি আমাদেরকে একটি পতাকা এনে দিয়েছেন, যার জন্ম না হলে আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তার পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আমাদের জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গিয়েছেন। স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার। সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। তিনি ১৯৭২ থেকে ৭৫ এর অগাস্ট পর্যন্ত যেসব বিষয় গুলো নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন, পরিকল্পনা করেছিলেন সেসব কিছুই আজ সম্ভব ও বাস্তবে রুপান্তরিত করছেন তারই সুযোগ্য কন্যা আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কিন্তু ১৯৭২ সালেই বুঝেছিলেন রপ্তানি করতে হবে, রপ্তানি ছাড়া একটি দেশ কোনভাবেই আগানো যাবেনা। সেই রপ্তানি আজকে এক অনন্য শিখরে নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। মুজিব জন্মশত বার্ষিকী ও আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি এই দুটি বিষয় আমরা একসাথে পেয়ে গিয়েছিলাম তারপরেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জাতির কল্যাণে এই দুটি বিষয়কে নিয়ে ব্যাপক উদযাপন থেকে তিনি বিরত থেকেছেন। ব্যবসায়ীরা বলার আগেই উনি ১ লক্ষ কোটি টাকার উপরে যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে যেখানে যেখানে বাড়িয়ে দেওয়ার দরকার ছিল সেখানে সেখানে তিনি এটা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এবং উনার নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে শুর করে বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের সব রকমের সহযোগিতা করেছিলেন। উনি কিন্তু করোনার প্রথমেই রপ্তানি খাত গুরুত্ব দিয়েছিলেন এর জন্য তিনি শুরুতেই রপ্তানি খাতের জন্য সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। এই যে তার সিদ্ধান্তগুলো ও দূরদর্শিতা তিনি এই করোনার প্রাক্কালে দেখিয়েছিলেন এটা যে দেশের জন্য কতটা মঙ্গলকর হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা।
আব্দুল্লাহ আল বাকি বলেন, আজ আমাকে এই সংলাপে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ফ্রান্স ও সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সঞ্চালক ও ভোরের পাতা কর্তৃপক্ষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যার জন্য আমরা এই সোনার বাংলা পেয়েছি এবং আজকের তারই উত্তরাধিকার জননেত্রী শেখ হাসিনা যিনি আজ সারা বিশ্বে মানবতার মা হিসেবে উপাধি পেয়েছেন। তিনি তার কাজের জন্যই এই উপাধি পেয়েছেন। আজকে শুধু দেশেই নয় বিশ্বের রাজনীতিতেও তিনি অনন্য উদাহরণ। আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে অনেক গর্বিত যে এমন একজন নেত্রীর নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে তার জন্য আমরা আজ গর্বিত যেখানে বাংলাদেশকে আগে সবাই একটা বন্যা কবলিত একটা দেশ হিসেবে জানতো বিশেষ করে এখানে। এর বাইরে আমাদের যে সামাজিক, রাজনৈতিক একটা পরিচয় আছে সেটা কেউ জানতো না। আজকে এই পরিচয় থেকে দেশকে এক নতুনভাবে পরিচয় দিছেন আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর জিয়া ও এরশাদের সামরিক সরকার আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকে নিশ্চিহ্ন করার বা মুছে ফেলার জন্য নানা ষড়যন্ত্র ও কৌশল নিয়েছিল। ন্যাক্কারজনকভাবে ইতিহাস বিকৃত করেছে। শেখ হাসিনা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছেন। জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থনে সিক্ত আওয়ামী লীগ স্বমহিমায় রাজনৈতিক অঙ্গনে সরব ছিল বিধায় তাদের হীনউদ্দেশ্য হাসিল হয়নি। বাংলাদেশের রাজনীতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগই নিয়ন্ত্রণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই করোনাকে সামাল দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম সেভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রকাশ পেয়েছে। করোনা মোকাবেলায় তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছেন। আশা করা যায়, তাঁর নিরলস পরিশ্রম ও অদম্য মনোবলের কারণে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের আগেই করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসবে।