যশোর জেলা পরিষদের জমির গাছ বাজারদরের অর্ধেক টাকায় নিলাম করলো বনবিভাগ। এ নিয়ে সরকারের দুই বিভাগের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরোধ। ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ বনবিভাগের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে তারা গাছ কর্তনকারী ঠিকাদারদসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে যশোর কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, শহরের পুরাতন কসবা ঘোষপাড়ার হাবিবুর রহমান (৪০), নীলগঞ্জের মনিরুজ্জামান খান (৫০), সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের খোরশেদ (৬৮), মনিরামপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর গ্রামের শামীম হোসেন (৪৫), সদরের চাড়াভিটা গ্রামের আব্বাস আলী (৩২), সুলতানপুর গ্রামের মিজানুর রহমান (৪০), হুগলাডাঙ্গা গ্রামের জাকির হোসেন (৪০), দেয়াপাড়া গ্রামের রনি (২৫), রিপন হোসেন (৩০), হানিফ গাজী (৪৫), জীবন (২০), নিমতলার ইকবাল (৩৫) এবং কচুয়া গ্রামের জসিম (৩০)।
যশোর জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মো. আশরাফ হোসেন মঞ্জু জানান, গত ২১ নভেম্বর যশোর-নড়াইল সড়কের পাশে শেখহাটি তারাগঞ্জ সড়কের ভায়না বাজার থেকে ধানঘাটা ব্রিজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কের ৩৩৭টি বড় রেন্ট্রি ও বাবলা গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, যার বাজারমূল্য কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা। অথচ বনবিভাগ মাত্র অর্ধেক টাকায় এসব গাছ নিলাম করেছে।
তিনি জানান, সড়কের জায়গার মালিক জেলা পরিষদ। সেই হিসেবে গাছগুলোর মালিকও আমরা। কোনরকম যোগাযোগ না করে বনবিভাগ গোপনে এসব গাছ বিক্রি করেছে। অথচ সব গাছই জীবিত। এই ঘটনায় আমরা ১৩ জন গাছ কর্তনতকারীর বিরুদ্ধে বুধবার কোতয়ালি থানায় মামলা করেছি।
কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান জানান, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ১৩ জন গাছ কর্তনকারীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জমা দেয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার তারাগঞ্জ গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, আমাদের আঞ্চলিক সড়কের সব গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে করে গরমকালে খুব কষ্ট পেতে হবে। গাছগুলো আমাদের ছায়া দিয়ে রাখত। শুনেছি জীবিত গাছ কাটা সরকার নিষেধ করেছে। অথচ সরকারেরই লোক গাছ কেটে ফেলল।
যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল জানান, যেহেতু সড়কের জমির মালিক আমরা। সেই কারণে গাছগুলোর মালিকানাও জেলা পরিষদের। আমাদের সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ না করে গাছগুলো কম দামে বনবিভাগ বিক্রি করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি। একইসঙ্গে যারা গাছগুলো কেটেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
এ ব্যাপারে সামাজিক বনবিভাগ যশোরের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো: সাজ্জাদুজ্জামান জানান, আমরা জানতাম জমির মালিক ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ। যদি জেলা পরিষদ মালিক হয় তাহলে তাদের নিলাম মূল্যের ২৫ শতাংশ দেয়া হবে।
তিনি জানান, আমরা বনবিভাগের নিয়মানুযায়ী ৩৩৬টি গাছ নিলাম করেছি। নিলামমূল্য এসেছে ২২ লাখ ৩০ হাজার ৩শ’ টাকা।