প্রকাশ: বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ৭:১৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সিরাজদিখানের ষড়যন্ত্রমুলক ধর্ষণ মামলা দিয়ে ১টি পরিবারকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার দক্ষিন পাউসার গ্রামের ভূক্তভোগী পরিবাটির স্বজরা এমনটাই দাবী করেন। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এই ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলে পরিবারটির অভিযোগ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মুন্সীগঞ্জ পিটিশন মামলার (মামলা নং-৩২৩/২০২০) বাদী একই এলাকার বাসিন্দা (৩৮)। বাদী মামলায় উল্লেখ করেন যে, তার গত ০২/০২/২০২০খ্রী: তারিখ দুপুরে চাচাতো বোনের স্বামী মো. বাদল দেওয়ান (৪৭) বাদীর ৬ বছরের কন্যাকে ঘরে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তার মেয়ে কৌশলে আসামীর ঘর থেকে বাহিরে চলে আসে। তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পরলে মাকে ঘটনা খুলে বলে। পরে অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা করান। ঘটনা জানাজানি হলে বাদল দেওয়ান তার স্ত্রীকে দিয়ে ভয়ভীতি দেখায় বলে মামলা সূত্রে জানা যায়।
এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, মামলা দায়েরের পরে সিরাজদিখান থানা পুলিশ কয়কদিন আগে এজাহারভুক্ত তাঁত কারিগর বাদল দেওয়ানকে ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরন করেন। জানা যায়, ওই মেয়েটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ছাত্রী। লকডাউনের আগের ঘটনা তখনও সে নিয়মিত স্কুলে এসেছে। খেলাধুলায় অংশ নিয়েছে। তবে বাদলের শশুর বাড়ির সম্পত্তির নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ থাকার কথাও জানান তারা। এছাড়াও মামলায় উল্লেখিত ঘটনার তারিখে সে বাড়িতে ছিলেননা।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নাজির আহমেদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমার ছাত্রীর বাড়িতে যাই। তার মা আমাকে জানায়, ঘটনার এক সপ্তাহ পরে মেয়ের ব্লিডিং হয়। তার কথা অনুযায়ী দেশে লকডাউনের আগের ঘটনা এটি। আমার জানামতে ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত ছিল।
বাদল দেওয়ানের বড় ভাই রাজ্জাক দেওয়ান বলেন, ছোট ভাই বাদলের শশুরের কোনও পুত্র সন্তান না থাকার সুবাদে স্ত্রী সন্তান নিয়ে শশুর বাড়িতে বসবাস করে। একই এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত সেখানে থাকছে তার বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ আমি বিশ্বাস করিনা। ওর শশুর বাড়িতে চাচাতো শেলকদের সাথে জায়গাজমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। বাদলের স্ত্রী পুষ্প কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তার কোন ভাই নেই। স্বামী সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকেন। চাচাতো নূরে আলম ও নুরুজ্জামানদের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। একটি পক্ষ বলছে তাদের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ সমাধান করে ফেলো। তিনি দাবী করেন, জমি দখলে নেয়ার জন্যই তার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষন মামলা দিয়ে ফাসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সুষ্টু তদন্তের অনুরোধ করেন তিনি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ দেওয়ানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। শিশুটির সাথে বাদল এধরনের একটি অপরাধমূলক ঘটনা করবে আমার তা বিশ্বাস হয়না। স্থানীয় ইউপি সদস্য কাঞ্চনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। মামলার বাদীর কাছে এবিষয়ে জানতে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন নম্বরটি (০১৭২৩২৭৪৬৬৭) বন্ধ পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিরাজদিখান থানার এসআই আব্দুল করিম জানান, মামলা দায়ের পরে আসামী গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। এই মামলার ভিক্টিমের মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পাইনি। এখনও তদন্ত চলছে।