প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ৯:২৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
কুমিল্লার আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) কক্ষে প্রবাসীর সাবেক স্ত্রী ও এক তরুণের বিয়ে হয়েছে। মঙ্গলবার এই বিয়ের আয়োজন করা হয়।
বিয়েতে বর ও কনের পরনে উৎসবের পোশাক ছিলো না। বরের হাতে ছিলো হাতকড়া আর কনের মুখে করোনা প্রতিরোধী মাস্ক। তবে অন্যান্য ধর্মীয় নিয়ম পালন করা হয়। ১০ লাখ টাকা দেন মোহরে বিয়ে পড়ান কাজী মাওলানা মো. অলি উল্লাহ ভূঁইয়া। বিয়ের পর মোনাজাত শেষে উপস্থিত সবার মাঝে খেজুর বিতরণ করা হয়।
আদালতে বর কনেকে দেখতে ভিড় করে উৎসুক মানুষ। কনে বাড়িতে গেলেও বর গেলেন কারাগারে। তিনি আইনি কার্যক্রম শেষে বুধবার মুক্তি পেতে পারেন। এর আগে কুমিল্লার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাব উল্লাহ আপসের শর্তে তরুণকে জামিন দেন এবং আদালত আঙিনায় বিয়ের নির্দেশনা দেন।
জানা যায়, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ভাঙ্গাপুস্করনী গ্রামের ওই তরুণীর বিয়ে হয় এক সৌদি প্রবাসীর সঙ্গে। তাদের চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে। ২০১৫ সালে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় একই উপজেলার পারুয়ারা গ্রামের সজিব হোসেন লিটনের।
লিটন তার অনিচ্ছায় দৈহিক সম্পর্ক করে। সেই ছবি তুলে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সেই ভিডিও তার প্রবাসী স্বামীর পরিবারে পাঠায়। যার কারণে স্বামী তাকে ডির্ভোস দেন। পরবর্তীতে তার কাছে পুনরায় পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তিনি অপারগতা প্রকাশ করে গত অক্টোবর মাসে চৌদ্দগ্রাম থানায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সরকার গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ বলেন, বাদীর দাবি অনুযায়ী আসামি তাকে ফাঁদে ফেলে ছবি তুলেছেন। সেই ছবি প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠানোর কারণে তাকে ডির্ভোস দিয়েছেন। বাদী ও আসামি পক্ষ এলাকায় বিয়ের শর্তে আপস করে এসেছেন। আদালত আপসের শর্তে আসামিকে জামিন দিয়েছেন। এছাড়া আদালত আঙিনায় বিয়ের নির্দেশনা দিয়েছেন। ১০ লাখ টাকা দেন মোহরে পিপির কক্ষে বিয়ে হয়েছে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তারেকুল আলম রাসেল বলেন, মূলত বাদী ও আসামির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। আসামিও জানতেন না বাদী বিবাহিত। এটা মূলত ভুল বোঝাবুঝি। এখন আপসের কারণে আদালত জামিন দিয়েছেন এবং বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন। এদিকে এ বিষয়ে বাদী ও আসামি পক্ষের বক্তব্য জানতে চাইলে তারা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।