প্রকাশ: সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৩৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
অফুরন্ত সম্ভাবনার অপর নাম বাংলাদেশ। এ দেশের রয়েছে অমিত সম্ভাবনাময় ষোল কোটি মানুষের বত্রিশ কোটি হাত। ষোল কোটি মানুষ বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ। কেননা আবহমানকাল থেকেই এ দেশের মানুষেরা কর্মনিষ্ঠ, পরিশ্রমী। এক সময়ের অচেনা বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। দেশে একে একে উন্মোচিত হচ্ছে সম্ভাবনার দ্বার। চার লেন মহাসড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এলএনজি টার্মিনাল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, পরিকল্পিত বহুমুখী বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলাসহ উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে দেশজুড়ে। পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরুর পর থেকেই একের পর এক মেগা প্রকল্প নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রদায়িক নন, তিনি এখনও এদেশকে জাতির পিতার মতো অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তুলতে চান, টিকিয়ে রাখতে চান। এই বঙ্গবন্ধুর সম্ভাবনার বাংলাদেশে মৌলবাদীদের কোন ঠাই নেই।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৬৭ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সোমবার (২৩ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী সদস্য এবং সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, সুইডেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল হাসান। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গিয়েছেন। স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার। সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। শোষণ বৈষম্যর অবসান ঘটিয়ে প্রত্যেক মানুষকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। জাতির পিতার কাছে জনগণের থেকে প্রিয় আর কিছু ছিল না। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্র ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে স্বাধীনতার স্থপতি মহাকালের মহাপুরুষকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা, শিশু রাসেল ও নারী সদস্যসহ পরিবার ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সকলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বাংলার ইতিহাসে কলঙ্কময় অধ্যায় সৃষ্টি করে তারা হত্যার রাজনীতির অবতারণা করে। গণতন্ত্রকে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে। হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে আইনের শাসন সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করে। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে অবস্থান করায় বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। শেখ হাসিনা তাঁর পিতার স্বপ্ন সোনার বাংলা নির্মাণে এবং দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য নানা পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেন। বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন করেন। খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা আনেন। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নানামুখী প্রকল্প চালু করেন। দেশের অর্থনীতির বেশ উন্নয়ন হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়। ভারতের সাথে ফারাক্কা চুক্তি করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান আনেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তি করেন। শান্তি চুক্তির আওতায় শান্তি বাহিনীর সদস্যরা তাদের অস্ত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে সমর্পণ করে। বিশ্বের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা বিরল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও আন্তরিকতায় এটা সম্ভব হয়েছিল। আজকে এই উন্নয়নের দেশে যারা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যারা বহির্বিশ্বে দেশের বিরুদ্ধে আজগুবি নালিশ করে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিতে উসকানি দেয়, শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশকে কলুষিত করতে চায়, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ দেশের জনকের বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্রমূলক কূটচালের সাহস করতে না পারে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিরোধ করতে হবে। বাংলাদেশে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে অনন্য নজির স্থাপিত হয়েছে, সে আদর্শ সমুন্নত রাখতে হবে যেকোনো মূল্যে।