বাংলাদেশকে নিয়ে শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে সশস্ত্র বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে: অধ্যাপক ড. শাহীনূর রহমান
প্রকাশ: শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৪৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
‘মুজিববর্ষ’ ও করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে পালিত হচ্ছে ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস। বাংলাদেশ ও সশস্ত্র বাহিনীর ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত এবং একে অপরের সম্পূরক। দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর অবদান মূল্যায়ন করলে এই দিবসটির গুরুত্ব উপলব্ধি করা সম্ভব। উপরন্তু গত সাড়ে ১১ বছরে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন ও তাদের কার্যক্রমের সাফল্যগাথা বিশ্লেষণ করলেও স্পষ্ট হবে এই দিবসটি উদযাপনের তাৎপর্য।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৬৫ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। শনিবার (২১ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব:) মোহাম্মদ আলী শিকদার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সামরিক গবেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া এর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহীনূর রহমান। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ড. শাহীনূর রহমান বলেন, আজকের এই যে দিনটি আমাদের জন্য গৌরবের দিন। আমরা সকলে জানি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের আজকেই এই দিনটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণতম একটি দিন। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি সাড়া দিয়ে বাঙালী জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধের সময় আজকের এই দিনে নৌ বাহিনী ও বাহিনীর সম্মলিত ভাবে হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে যা একটি বড় ইতিহাস। ৭ মার্চ থেকে ২১ নভেম্বর, মাত্র ৮মাস ১৪ দিন পর জন্ম নিল; বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। জন্ম নেয়ার সাথে সাথেই শুরু হয় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্ধর্ষ, দুর্নিবার আক্রমণ। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর ৭১, অর্জিত হলো; বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন ও সাফল্যের বিজয়। বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাদের নিয়ে গঠিত মিত্র-বাহিনীর কাছে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর প্রায় এক লক্ষ সেনাসদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে, জাতির পিতার স্বাধীনতা ঘোষণার সেই ঐতিহাসিক প্রাঙ্গণ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। সেই থেকেই- “স্বাধীনতা” শব্দটি আমাদের। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পাশাপাশি স্বাধীনতা যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘটে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। জাতির প্রয়োজনে অর্পণ করা কঠিন দায়িত্ব পালনে সশস্ত্র বাহিনীর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা অনন্য। দেশের প্রতিরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ আর জনগণের জন্য ভালবাসা এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আমাদের সশস্ত্রবাহিনীর দেশপ্রেম। শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে -‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কার সাথে বৈরিতা নয়।’ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক এজন্য প্রয়োজন। পাশাপাশি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের সুশিক্ষিত ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী থাকাটা অন্যতম শর্ত। আজকের পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিন বাহিনীর ধ্যান ধারণা, চিন্তা-চেতনার আধুনিকায়ন করে যেতে হবে। কারণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করছে। এই ধারা অব্যাহত রাখা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমুন্নতি বিধানের জন্য সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। বাঙালী জাতির মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের সকলকে কাজ করে যেতে হবে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে যোগ্য তনয়া শেখ হাসিনার ভিশন ২১, ভিশন ৪১, ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নের জন্য আমি বিশ্বাস করি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত যোগ্যভাবে নিজেদেরকে গড়ে তুলছে।