রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
পাঁচ মাসে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৫ মৃত কিশোরীকে ধর্ষণ করে মুন্না!
প্রকাশ: শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০, ৮:২০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

পাঁচটি আত্মহত্যার ঘটনা। আত্মহত্যাকারী প্রত্যেকে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোরী। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ এসেছিল রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে। লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না, ছিল না ধর্ষণের আলামতও। অথচ সিআইডির ল্যাবরেটরিতে ডাক্তারের পাঠানো প্রতিটি মরদেহের ‘হাই ভেজাইনাল সোয়াবে (এইচভিএস) ’ পাওয়া গেল একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি।

অনুসন্ধানে জানা গেলো, মরদেহগুলো মর্গে আসার পর সেগুলোর সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করেছিলেন ডোমের সহযোগী মুন্না ভক্ত (২০)।
 
মুন্না ভক্তকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ শুক্রবার ঘটনাটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে তারা। মুন্নার বাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের জুরান মোল্লার পাড়ায়। তিনি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের কোনো কর্মচারী নন। হাসপাতালের ডোম শ্রী যতন কুমারের ভাগনে হওয়ার সুবাদে তিনি সেখানে কাজ করতেন। মর্গের চাবি তাঁর কাছে থাকত। মর্গে আসা মরদেহগুলো তিনি গ্রহণ করতেন, ময়নাতদন্তের সময় ডাক্তারদের সাহায্য করতেন এবং ময়নাতদন্ত শেষে লাশগুলো স্বজনদের বুঝিয়ে দিতেন।

সিআইডি বলছে, গত বছরের ২৯ মার্চ থেকে চলতি বছরের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত মুন্না অন্তত পাঁচজন মৃত কিশোরীর লাশ ধর্ষণ করেছেন বলে তারা প্রমাণ পেয়েছে। মৃত এই কিশোরীদের বয়স ছিল ১১ থেকে ১৭ বছর। আত্মহত্যার পর তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছিল।

এই ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলায় সিআইডির পরিদর্শক মো. জেহাদ হোসেন বলেছেন, মৃত্যুর আগে ওই কিশোরীরা ধর্ষণের শিকার হয়েছিল কি না, তা জানতে ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার মরদেহের ‘হাই ভেজাইনাল সোয়াব (এইচভিএস) ’ সিআইডির ডিএনএ ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছিলেন। পরীক্ষায় এই এইচভিএসগুলোতে পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়। শুক্রাণুর ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিং করে সেটি একই ব্যক্তির বলে নিশ্চিত হন পরীক্ষকেরা। অথচ এই মরদেহগুলোর সুরতহালে বলপ্রয়োগজনিত কোনো আঘাতের চিহ্ন বা ধর্ষণের চিহ্নের কথা উল্লেখ ছিল না। এই পাঁচ তরুণীর লাশই যেদিন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল, তার পরদিন ময়নাতদন্ত করা হয়।

জেহাদ হোসেন বলেন, যেহেতু লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না, তাই তরুণীদের লাশ হাসপাতালে আসার পর কিছু একটা ঘটেছে বলে তাঁরা ধরে নেন। তখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডোম ও তাঁর সহযোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তাঁরা। বিষয়টি টের পেয়ে মুন্না হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। পরে বাবুবাজার সেতু থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ চালু হয় ২০১৭ সালের অক্টোবরে। মর্গের সরকারি বেতনভুক্ত একমাত্র ডোম শ্রী যতন কুমার।

তিনি বলেন, ২০১৮ সাল থেকে মুন্না তাঁর সঙ্গে কাজ শুরু করেন। মুন্নাসহ তাঁর সহযোগীর সংখ্যা চারজন। তাঁরা রাতে মর্গের কোনো কক্ষে বা বারান্দায় থাকতেন। এর বাইরে একজন নারী আছেন, যিনি কাজ করে চলে যান। যতন জানান, মর্গের একমাত্র বেতনভুক্ত কর্মচারী তিনি। ময়নাতদন্ত করতে নিয়ে আসা স্বজনেরা যে বকশিশ দেন, তা দিয়ে বাকিদের মাসোহারা দেওয়া হয়।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গটি কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সেলিম রেজা বলেন, ছেলেটা মানসিকভাবে অসুস্থ। কোনো সুস্থ ব্যক্তির দ্বারা এটা সম্ভব না। এই যৌন বিকৃতিকে নেক্রোফিলিয়া বলা হয়।

হাসপাতালের কর্মচারী না হওয়া সত্ত্বেও সেখানে এই যুবকের কাজ করার বিষয়ে সেলিম রেজা বলেন, কোনো প্রশিক্ষিত ‘মর্চুয়ারি অ্যাসিসটেন্ট’ নেই। বিষয়টিকে কেউ গুরুত্বের সঙ্গে দেখে না। ব্রিটিশ আমল থেকে যাঁরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরাই বংশগতভাবে এটি করে যাচ্ছেন। এ কারণে যিনি ডোম হিসেবে নিয়োগ পান, তিনিই তাঁর সহযোগী হিসেবে আত্মীয়স্বজনের কয়েকজনকে নিয়ে আসেন।

সেলিম রেজা মনে করেন, একজন প্রশিক্ষিত মর্চুয়ারি অ্যাসিসটেন্ট কখনো এই কাজ করতেন না। মর্গ, ময়নাতদন্তের দিকে সংশ্লিষ্টদের আরও নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও উদ্যোগী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]