প্রকাশ: শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০, ১:৪১ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে এমপি শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতে দায়ের করা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হচ্ছে আগামী সপ্তাহে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার কুয়েতের অপরাধআদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল-ওসমান আগামী সপ্তাহে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার আদেশ দেন। গতকাল শুক্রবার কুয়েতের দৈনিক আল-রাইয়ের এক খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে পরবর্তী সপ্তাহে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন রাখেন বিচারক। জনশক্তি রফতানিকারক পাপুলকে গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। মানব ও অর্থপাচার এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগে সেখানে তার বিচার প্রক্রিয়া চলছে। ১৭ সেপ্টেম্বর কুয়েতের অপরাধ আদালতের কাউন্সেলর আবদুল্লাহ আল-ওসমানের আদালতে পাপুলের বিচার শুরু হয়। সেদিন জামিন আবেদন নাকচ করে পাপুলকে কারাগারে পাঠিয়ে ১ অক্টোবর অভিযোগ শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছিল আদালত।
এর মধ্যে ২৯ সেপ্টেম্বর কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ মৃত্যুবরণ করলে আদালতের কার্যক্রম স্থগিত হয়। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুলের সেখানে বসবাসের অনুমতি রয়েছে। পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন। গ্রেফতারের পর ১৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল এমপি পাপুলকে। কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশনের তদন্তে পাপুলসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, মানবপাচার, ঘুষ বিনিময় ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাপুলের সঙ্গে অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন কুয়েতের দুজন সংসদ সদস্য সাদুন হাম্মাদ আল-ওতাইবি ও সালাহ আবদুলরেদা খুরশিদ। বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ‘ঘুষ নিয়ে’ অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক অ্যাসিসট্যান্ট আন্ডার সেক্রেটারি বরখাস্ত মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহর রয়েছেন অভিযুক্তদের মধ্যে। কুয়েতি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, অভিযুক্তদের মধ্যে আরও তিন বাংলাদেশি নাগরিকের জামিন বাতিল করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিল আদালত। আল-কাবাসের খবরে বলা হয়, পাপুলের বিষয়ে অভিযোগ তদন্তের সময় অভিযুক্ত হিসাবে ১৩ জনের নাম উঠে আসে। এর মধ্যে থেকে চারজনকে তদন্তকালে বাদ দেওয়া হয়। সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য।