সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে করোনা
প্রকাশ: শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০, ১:৪১ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

ইউরোপে প্রতি ১৭ সেকেন্ডে একজনের মৃত্যুভোরের পাতা ডেস্ক
চীন থেকে উৎপত্তি করোনার প্রথম ঢেউ সামলানো গেলেও দ্বিতীয় ঢেউ সামলানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র ইউরোপ মহাদেশেই প্রতি সতের সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু ঘটছে বলে জানিয়েছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি এই বৈশি^ক মহামারি অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলার জন্য মানুষের উপেক্ষা এবং উদাসীনতাকে দায়ী করেছে। টিকার বিকল্প যে মাস্ক সে বিষয়ে মানুষের অসচেতনাকে দায়ী করে সংস্থাটি আশঙ্কা করেছে, এখনও যদি মানুষ সচেতনতা অবলম্বন না করে তাহলে তাদেরকে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখী হতে হবে। দেখা দিতে পারে মানবিক বিপর্যয়। মৃত্যুর সংখ্যা তখন হাজার বা লাখে নয় কোটিতেও পৌঁছাতে পারে বলে সংস্থাটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় বিষয়টি যে আর উপেক্ষার নয়, করোনার ভয়াবহ রূপ সেটিকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।
শীতকালকে সামনে রেখে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। শীতকালে যে করোনা আরো আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে এবিষয়ে স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা আগে থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বর্তমানে ভাইরাসটির দ্বিতীয় ঢেউয়ে ইউরোপকে টালমাটাল করে দিচ্ছে। মহাদেশটিতে করোনায় হয়ে প্রতি ১৭ সেকেন্ডে একজন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আগামী ছয় মাস ইউরোপীয় দেশগুলোকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যেতে হবে বলেও জানিয়েছেন সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় অঞ্চলের পরিচালক হ্যান্স ক্লুগ গত বৃহস্পতিবার ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউরোপে গত এক সপ্তাহে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৯ হাজার মানুষ মারা গেছে। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউরোপীয় দেশগুলোতে প্রতি ১৭ সেকেন্ডে করোনা আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হচ্ছে। তিনি বলেন, কিছু দেশে লকডাউন কড়াকড়ি করার মাধ্যমে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমানো সম্ভব হয়েছে। গত মাসে ইউরোপে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকানোর জন্য বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশে লকডাউন বাস্তবায়নে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
ইউরোপে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৫৭ লাখের বেশি মানুষ। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৫৪ হাজার মানুষের। এসব মানুষের মধ্যে বেশিরভাগই ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি ও জার্মানির নাগরিক। এসব দেশের মধ্যে ব্রিটেনে সর্বাধিক ৫৩ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। অন্যদিকে আক্রান্তদের সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এ পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।হ্যান্স ক্লুগ জানিয়েছেন, বিশ্বের মোট কোভিড আক্রান্ত রোগীর ২৬ শতাংশ এবং মোট মৃত্যুবরণকারীদের ২৮ শতাংশ ইউরোপের অধিবাসী।
মাস্ক না পরলে দিল্লিতে দুইহাজার রুপি ফাইন :ভারতের রাজধানী দিল্লিতে নতুন আইন জারী করা হয়েছে। সেখানে মাস্ক না পরলে ২ হাজার রুপি জরিমানার কথা বলা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে কড়াকড়ির আওতায় এই জরিমানার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে কেউ মাস্ক না পরলে দুই হাজার রুপি জরিমানা করা হবে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এর আগে দিল্লিতে মাস্ক না পরলে জরিমানা ছিল ৫শ’ রুপি। কেজরিওয়াল বলেন, ‘অনেক সময় শুধু কথায় কাজ হয় না। আমাদেরকে একটু কঠোর হতে হয়।’ জনবহুল দিল্লিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দ্রুতই বাড়তে থাকায় কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। কিন্তু ভাইরাস সংক্রমণ বাড়ার মধ্যেও সেখানে বেশিরভাগ মানুষকেই মাস্ক পরাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায় না। মাস্ক না পরার জন্য জুন মাস থেকে দিল্লিতে প্রায় ৫০০,০০০ মানুষকে জরিমানা করা হয়েছে এবং সামাজিক দূরত্ব না মানার জন্যও ৩৭০,০০০ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে ভারতে দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছেই। এ সপ্তাহের শুরুতে সংক্রমণ ৩০ হাজারে নামলেও গত বুধবার তা সাড়ে ৩৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। আবার গত বৃহস্পতিবার আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জানায়, অধিকাংশ রাজ্যেই দৈনিক সংক্রমণ গত এক মাসে কমলেও দিল্লিতে এখনও তা ঊর্ধ্বমুখী।
দেশে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় ২২৭৫ জন শনাক্ত, মৃত্যু ১৭ :গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরসে আরও ২২৭৫ জন শনাক্ত হয়েছেন। আর এসময় মারা গেছেন ১৭ জন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর কোভিড-১৯ সংক্রমণের সর্বশেষ এই তথ্য জানিয়েছে। তাতে দেখা যায়, গত একদিনে নতুন ২ হাজার ২৭৫ জনকে নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৪ জনে। আরও ১৭ জন মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা  এখন ৬ হাজার ৩২২ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে গত একদিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৭০৯ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। এনিয়ে সুস্থ রোগীর মোট দাড়ালো ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪৩১ জনে। করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তা ২৬ অক্টোবর ৪ লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ৪ নভেম্বর তা ছয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৩তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৭টি ল্যাবে ১৫ হাজার ৬০৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ২৬ লাখ ২২ হাজার ৫৫৯টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ আর নারী ৬ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
রেমডেসিভিকে অকার্যকর বললো বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থা :করোনার প্রতিরোধে রেমডেসিভিরকে ‘প্রায় অকার্যকর’ বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর শারীরিক অবস্থা পরিবর্তনে মার্কিন ওষুধ কোম্পানি জিলিয়াড সায়েন্সের তৈরি ‘রেমডেসিভিরের’ কোন প্রভাব নেই বলে দাবি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। সংস্থাটি বলছে, রেমডেসিভির ব্যবহারের ফলে করোনা রোগীর মৃত্যুর হার ও ভেন্টিলেশনের প্রয়োজনীয়তা কমার বৈজ্ঞানিক কোনও ভিত্তি নেই। গতকাল শুক্রবার গাইডলাইন ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ (জিডিজি) নামে ডব্লিউএইচওর একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল এ তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে। প্যানেলটি চারটি আন্তর্জাতিক দৈবচয়ন পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। পরীক্ষায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সাত সহস্রাধিক রোগী অংশগ্রহণ করেছিল। পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করে প্যানেলটি জানিয়েছে, রেমডেসিভির ব্যয়বহুল এবং প্রয়োগে জটিলতা রয়েছে এবং মৃত্যু হার বা অন্যান্য ক্ষেত্রে গুরুতর উন্নতি ঘটায় না। ডব্লিউএইচওর এই মন্তব্যে অসন্তষ্টি প্রকাশ করেছে উৎপাদক কোম্পানি তবে জিলিয়াড। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘একাধিক গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে হাসপাতালে ভর্তিকৃত করোনা রোগীদের জন্য চিকিৎসায় অনুমোদিত ভেকলারি (রেমডেসিভিরের ব্র্যান্ড নাম)। বিশ্বে যখন করোনা রোগীর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে এবং চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসায় প্রথম ও একমাত্র অনুমোদিত অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের ওপর নির্ভর করছে তখন ডব্লিউএইচও’র এমন নির্দেশনাতে আমরা হতাশ।’
এদিকে বাজারে যেসব টিকার কথা বলা হচ্ছে সেসব টিকার কার্যকারিতা নিয়েও বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্বেগ রয়েছে। সংস্থাটির সন্দেহের পালে বাতাস দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের সন্দেহ। সন্দেহের মূলে বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা উপজীব্য হিসাবে কাজ করছে। এরই মধ্যে গবেষকদের ভেতরে সন্দেহ দানা বাধা শুরু করেছে। গবেষকদের একটি বৃহৎ অংশের মতে, যেকোন ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা উৎপাদনে প্রচলিত যে নিয়ম অনুসরণের তাগিদ রয়েছে এক্ষেত্রে সেটা মানা হচ্ছে না। যা একটি কার্যকর টিকা উৎপাদনের প্রতিবন্ধক।  সাধারণত চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগার কথা কার্যকর টিকা উৎপাদনে। বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যমে তা কতটা কার্যকর হতে পারে সেবিষয়ে পূর্ণ সিদ্ধান্তে আসতে হলে এই সময় একান্ত অপরিহার্য্য। কিন্তু বর্তমানে করোনা টিকার ক্ষেত্রে সে সময় এবং পরীক্ষা কোনটাই মানা হচ্ছে না। কোন রকম নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই সেটি মানবদেহে ব্যবহার উপযোগী করতে প্রতিযোগিতা চলছে। কোন কোন কোম্পানি নিজেরাই তাদের টিকা কার্যকর বলে দাবি করে একধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এসব কারণে করোনার টিকা আর্শিবাদ না হয়ে অভিশাপে পরিণত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]