প্রকাশ: বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ৭:২৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি মজনুর দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রত্যাশা করছে ভুক্তভোগী পরিবার। এদিকে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম মর্মে সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। আর আসামিপক্ষ বলছে, রাষ্ট্রপক্ষ মজনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। এজন্য তিনি খালাস পাবেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) মামলাটি রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য রয়েছে। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসা. কামরুন্নাহার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আশা করছি— রায়ে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। তিনি বলেন, যখন মামলাটি দায়ের করা হয়, তখন ধর্ষণ মামলায় সর্বোচ্চ সাজা ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এখন যেহেতু সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের আইন পাস হয়েছে। তাই আসামির মৃত্যুদণ্ড আশা করছি।
সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ (অরেঞ্জ) বলেন, মামলাটি একটি আলোচিত মামলা। অনেকটা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলাটির বিচার শেষ করতে পেরেছি। আমরা উত্তেজিত না তবে সন্তুষ্ট। তবে আসামিকে নিয়ে বেগ পেতে হয়েছে। মজনু ওদ্ধত্য টাইপের লোক। তাকে নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োগ করতে হয়েছে। তারপরও সে উল্টোপাল্টা কথা বলেছে আদালতে। সে সাক্ষী এমনকি আমাকেও খুন করার হুমকি দিয়েছে। যাক তারপরও আমরা মামলাটির বিচার শেষ করতে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, সদিচ্ছা থাকলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার বিচার শেষ করা যায়। মজনুর মামলা এরই একটা উদাহরণ। আর এতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। এক্ষেত্রে আসামিপক্ষও আমাদের সাহায্য করেছে। যাই হোক, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি তার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।
সরকার থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত মজনুর আইনজীবী রবিউল ইসলাম রবি বলেন, মামলায় ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সাক্ষীদের সাক্ষ্য জেরায় মজনুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ নির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হয়নি। আশা করছি, তিনি খালাস পাবেন।
গত ৫ জানুয়ারি কুর্মিটোলায় ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন মজনু। ওই ঘটনায় ছাত্রীর অধ্যক্ষ বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
গত ৮ জানুয়ারি ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন শেওড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে র্যাব মজনুকে গ্রেপ্তার করে। ৯ জানুয়ারি আদালত মজনুর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ১৬ জানুয়ারি মজনু দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
গত ১৬ মার্চ মজনুকে একমাত্র আসামি করে ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবু সিদ্দিক। ওই দিনই আদালত মামলাটি পরবর্তী বিচারের জন্য নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন। গত ১৬ আগস্ট একই আদালত মজনুর বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। গত ২৬ আগস্ট মজনুর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। ১২ নভেম্বর আত্মপক্ষ শুনানি এবং রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করেন আদালত।