৭০-এর নির্বাচনে পিরোজপুর, কাউখালি-ভান্ডারিয়া ও কাঁঠালিয়া আসনের মানুষের কাছে একরকম উগ্র ও জ্বালাময়ী বক্তব্যের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক। তাকে ভোট না দিলে দেশের মানুষের ধর্ম থাকবেনা, এমনকি এদেশ পূর্ব পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া বা ভারত হয়ে যাবে, এমন বক্তব্যও ব্যবহার করেন তিনি।
৭০-এর নির্বাচনী প্রচারণার তার বক্তব্যরূপে প্রকাশিত হয়, 'চরমোনাই পীর মওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক আসন্ন জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পিরোজপুর, কাউখালি-ভান্ডারিয়া ও কাঁঠালিয়া থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী, প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও সংগ্রামী জননেতা মওলানা আবদুর রহিমকে ভোট দেয়ার জন্যে মুসলিম জনগণ, বিশেষ করে তার মুজাহিদ্গণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পীর সাহেব মুসলিম জনগণ ও তার মুজাহিদগণের প্রতি উক্ত আবেদনে বলেনঃ আমার জীবনে কাউকে কোনোদিন ভোটের জন্যে অনুরোধ করিনি। এবার সঠিকভাবে জানতে পারলাম যে, ভোটের দ্বারাই পাকিস্তানে ইসলাম থাকবে, নচেত বিদায় নেবে। এ জন্যেই হক্কানী আলেমরা এবার ভোটের জন্যে জীবন পণ করেছেন।
তিনি বলেন, পিরোজপুর, কাউখালি-ভান্ডারিয়া ও কাঁঠালিয়া থেকে জাতীয় পরিষদে নির্বাচন প্রার্থী ও সুযোগ্য আলেম মাওলানা আবদুর রহীম পাকিস্তানে ইসলামী আন্দোলনের জন্যে দীর্ঘদিন ঘরে আন্দোলন করছেন। আপনারা নিজস্ব মোট অনুযায়ী জীবনভর ভোট দিয়েছেন। এবার সুযোগ্য প্রার্থী মাওলানা আবদুর রহীমকে ভোট দিয়ে আল্লাহ ও রসূলকে খোশ করুন।
পীর সাহেব এ মর্মে সাবধান বাণী উচ্চারণ করেন যে, এবার যদি নিঃস্বার্থ হক্কানী আলেমদের ভোট না দেন, তবে এই পাকিস্তান, হিন্দুস্তান, কিংবা চীন-রাশিয়ায় পরিণত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি তার মুজাহিদদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, একেও ইসলামের একটি জেহাদ মনে করবেন এবং আমার 'ভোট দিবেন কাহাকে' নামক বইটি পড়ে আমল করবেন।'
উল্লেখ্য, সেই নির্বাচনে ১৬২ আসনে ১৬০টি আওয়ামীলীগ জয় লাভ করে, ১টি স্বতন্ত্র, ১টি পিডিপি লাভ করে। অন্য দলগুলোর ওই আসন সহ বেশিরভাগ আসনেই নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। জনগণের সাড়া ছিলোনা তার দাবিতে। একই ধারার দাবি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিরুদ্ধেও করা হয়। যারা সেই দাবি করে তারা সেই নির্বাচনে ভেসে যায়। সারাদেশের ৩০০ আসনের ৯টিতে জয় লাভ করে।