বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এডিট করে সম্প্রচার!
প্রকাশ: বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ১১:০১ এএম | অনলাইন সংস্করণ

জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে গত রবিবার (১৫ নভেম্বর) জাতির পিতাকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ প্রস্তাব গ্রহণের আগে ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংসদে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অডিও শোনানো হয়। স্টিল ছবি যুক্ত করে সংসদে প্রচারিত এই ভাষণটি সম্পাদনা করে প্রচার হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ উঠেছে। সংসদে প্রচারিত ভাষণে বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে যে কথা বলেছিলেন, তা বাদ পড়েছে। জাতির পিতার ভাষণের লিখিত কপি ও অডিও শুনে তার সত্যতাও পাওয়া গেছে।

অবশ্য বিষয়টি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীরও নজরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘এই ভাষণটি তারা বাংলাদেশ বেতার থেকে সংগ্রহ করে হুবহু সম্প্রচার করেছেন। এডিট বা কোনও কিছু হয়ে থাকলে সেখানেই হয়েছে। আর কেবল ধর্ম নিরপেক্ষতার অংশ নয়, সংসদের প্রসিডিংসের আরও কিছু বিষয় ভাষণের অডিওতে নেই।’

রবিবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরপরই জাতির পিতার ৪ নভেম্বর ১৯৭২ সালের ভাষণের অডিও শোনানো হয়। ৪৬ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ভাষণে প্রণীত সংবিধান নিয়ে নানা বিষয় ব্যাখ্যা করেন বঙ্গবন্ধু। এতে তিনি বাহাত্তরের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি— জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু রবিবার সংসদে প্রচারিত অডিওতে মূলনীতির প্রথম তিনটি বিষয় নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য তুলে ধরা হলেও ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে তিনি যেসব কথা বলেছিলেন, সেই অংশ ছিল না।

সংসদে সম্প্রচারিত বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অডিও শুনে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রয়াত সাংবাদিক বেবী মওদুদ সম্পাদিত ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (১৯৭২-৭৫)’ বইটি পড়ে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধুর ভাষণে সমাজতন্ত্র নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের শেষের একটি অংশ এবং ধর্ম নিরপেক্ষাতা নিয়ে তাঁর বক্তব্যের বেশিরভাগ বাদ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে বক্তব্যের মূল অংশ বাদ পড়েছে। এর পাশাপাশি সমাজতন্ত্র নিয়েও তার বক্তব্যের ছোট একটি অংশ বাদ পড়েছে। এখানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের যে অংশটি বাদ পড়েছে (শেখ হাসিনা ও বেবী মওদুদ সম্পাদিত বইয়ের আলোকে) তা হলো— ‘…তার পরে আসছে ধর্মনিরপেক্ষতা। জনাব স্পিকার ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মকর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবোও না।’

''জনাব স্পিকার, ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মকর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবোও না। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রের কারও নেই। হিন্দু তাদের ধর্ম পালন করবে, কারও বাধা দেওয়া ক্ষমতা নেই। বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের কেউ বাধাদান করতে পারবে না। খ্রিস্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, কেউ তাদের বাধা দিতে পারবে না।''
 
‘ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রের কারও নেই। হিন্দু তাদের ধর্ম পালন করবে, কারও বাধা দেওয়া ক্ষমতা নেই। বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের কেউ বাধাদান করতে পারবে না। খ্রিস্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, কেউ তাদের বাধা দিতে পারবে না।’

ধর্ম নিয়ে সংসদে সম্প্রচারিত বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অংশটি হলো—‘আমাদের শুধু আপত্তি হলো এই যে, পবিত্র ধর্মকে কেউ রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। ২৫ বছর আমরা দেখেছি— ধর্মের নামে কী জুয়োচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেইমানি, ধর্মের নামে অত্যাচার, ধর্মের নামে খুন, ধর্মের নামে ব্যাভিচার এই বাংলার মাটিতে চলেছে। ধর্ম পবিত্র। পবিত্র স্থানে রাখতে দেন। একে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। এখানে যদি কেউ আমাদের বলেন, আমরা অধিকার খর্ব করেছি, অধিকার খর্ব করি নাই। সাড়ে সাত কোটি মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য এই অধিকারটুকু আমাদের খর্ব করতে হয়েছে।’ এই অংশটি অডিও ভার্সনে স্থান পেয়েছে। অর্থাৎ ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে যে মূল কথাগুলো বঙ্গবন্ধু সংসদে বলেছিলেন, সম্প্রচারিত ভার্সনে সেটা বাদ দেওয়া হয়েছে।

সংসদে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অডিও বাজানোর পর যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী গবেষক মাহবুবুর রহমান জালাল তার ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে সংসদে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এডিট করে প্রচার করার কথা তুলে ধরেন। সুইজারল্যান্ড প্রবাসী ব্লগার অমি রহমান পিয়ালও এ বিষয়টি উল্লেখ করেন। ভাষণে কোন অংশটি বাদ পড়েছে পিয়াল সেটাও তুলে ধরেন।

ভাষণের ধর্ম নিরপেক্ষতার অংশটি বাদ পড়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘ওটা না থাকলে আমাদের কী করার আছে? আমরা ওই অডিও ভার্সনটি বাংলাদেশ বেতার থেকে নিয়ে এসেছি। আমরা এটাকে এডিট করিনি। আমরা তাদের থেকে যে বক্তৃতা পেয়েছি হুবহু সেটাই শুনিয়েছি। সংসদে এটার কোনও কিছুতেই হাত দেওয়া হয়নি।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় এটার জন্য সংসদকে দায়ী করা হচ্ছে প্রশ্নে স্পিকার বলেন, ‘সংসদ এখানে কিছুই করিনি। যদি কেউ সংসদকে দোষারোপ করেন, তাদের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই— সংসদ এতে কোনও হাত দেয়নি। ভাষণটি যেভাবে পেয়েছি, সেভাবেই শুনিয়েছি। বাংলাদেশ বেতারে কী হয়েছে সেটা আমরা তো বলতে পারি না। এটা কোথায় পড়েছিল? কে কেটেছে? কে এডিট করেছে? তবে আমাদের সংসদের ছাপানো প্রসিডিংসে যেটা আছে হার্ড কপি। সেটার মধ্যে যে কথাগুলো আছে, তার অনেকটাই অডিও ভার্সনে নেই, এটা ঠিক। শুধু ধর্ম নিরপেক্ষতা নয়, ওর পরেও আরও অনেক কথা আছে, যেটা লিখিত কপিতে আছে, কিন্তু প্রচারিত ভাষণে নেই।’ সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]