দেশে করোনাকালীন সময়ে ই-কমার্স ও ই-ব্যাংকিং ভালো উন্নতি করেছে: ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৩৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
কোভিড-১৯-এ বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র চীন ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে। বড় অর্থনীতি না হলেও যে কটি দেশে প্রবৃদ্ধি হবে, তার মধ্যে আছে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে এমন দুর্গতির মধ্যেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশার কথাই শুনিয়েছে বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর আভাসও পাওয়া যাচ্ছে। করোনা মহামারির মধ্যেও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে দেশের পদ্মা সেতুর কাজ। ৪২টি পিলারের ওপর দাঁড়াবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। দ্রুত সময়ে এই সেতু নির্মাণ শেষ হোক-এটাই প্রত্যাশা। পদ্মা সেতু সহ করোনায় দেশে সকল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৬১ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক এবং এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুই প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন এই জাতি দেশ প্রেমিক জাতি, স্বাধীনচেতার জাতি। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ ছিল একটা বিরল যুদ্ধ যাতে প্রমাণ হয়েছে আমরা একটা মানবিক জাতি। আমরা যদি সাড়া পৃথিবীর যুদ্ধ বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাবো সেনাবাহিনী ছাড়া আর কেউ তেমন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই হেমিলনের বাঁশিওয়ালার মতো সাড়া জাতিকে জনযুদ্ধে সম্পৃক্ত করার ফলেই মাত্র ৯ মাসে আমরা স্বাধীনতা লাভ করতে পেরেছি। আমরা সুনামির সময়, সিডরের সময় দেখেছি সারা দেশে মানুষজন উদার করে একে অন্যকে সাহায্য করেছে। এই মানবিক বৈশিষ্ট্য সারা বিশ্বে আর কোথাও নেই। প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০০টির বেশি সার্কুলার জারি করেছে। আমাদের দেশের যেসকল দেশ প্রেমিক আছেন ইন্ডাট্রিয়ালিস্ট, সাংবাদিক, চিকিৎসক, ব্যাংকার, কৃষক, শ্রমিকদের স্যালুট জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেকেই বলেছিলেন দেশে কারফিউ দিতে, কিন্তু উনি তা করেননি। এটার সুফল আমরা পেয়েছি। আমাদের সাপ্লায় চেইন ভেঙ্গে যায়নি। আমাদের শিপমেন্ট বন্ধ থাকলেও কৃষি উৎপাদন বন্ধ হয়নি। এই করোনার সময়ে দেশে আমাদের ই-কমার্স ও ই-ব্যাংকিং খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। আমরা একটা ঘটনা ভালো ভাবেই জানি কোটোয়ালী পারাতে তরমুজ চাষিরা ইউএনওকে এসে বলেছে, আমাদের তো মাথায় হাত দেওয়ার মতো অবস্থা, আমরা কোনভাবেই তরমুজ বিক্রি করতে পারছিনা। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা ছুটিতে ছিল এবং ইউএনও তাদেরকে সাথে নিয়ে একটা সফটওয়্যার বানিয়ে ই-কমার্সের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে বলেছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ, সেটা কিন্তু আমাদের কাছে রুপকথার মতো মনে হয়েছিল, কিন্তু তার সুফল কিন্তু আজ আমরা ভালোভাবেই ভোগ করছি। বর্তমান প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনা এক সাহসী রাজনীতিকের নাম; যাঁর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি পাল্টে গেছে। তিনি মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে সব বিরূপ পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে নিয়ে এসেছেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় যুক্ত হয়েছেন অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক। কিছু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও উন্নয়ন সহযোগী ও অংশীদার বানিয়ে ফেলেছেন রাশিয়াসহ অন্য অনেক দেশকে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুত্বের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয়েছে। এই সরকারের উন্নয়নের মডেল অন্যান্য দেশের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে।