প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ৮:২৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
এক শিক্ষিকাকে খালি বাসায় ডেকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় চলছে।
রোববার জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয়েছে। তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সর্বোচ্চ সতর্কতা ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে পিবিআই।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকা জানান, তিনি ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর হাজী আব্দুল কুদ্দুস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোকেশনাল শাখায় সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেন। কলেজে যাতায়াতের সুবিধার্থে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন। আশুগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেনও একই এলাকায় থাকেন। এই সুবাদে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। ২০১৭ সালে কলেযের একটি অনুষ্ঠানে ওই শিক্ষিকার প্রতি কুনজর পড়ে আবুল হোসেনের। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় ক্রীড়া অনুষ্ঠান, জাতীয় দিবস উদযাপন ও সামাজিক অনুষ্ঠানে তাকে ডেকে নিয়ে দায়িত্ব দেন আর কাছাকাছি আসার চেষ্টা করেন আবুল হোসেন।
ওই শিক্ষিকা আরো জানান, এক পর্যায়ে আবুল হোসেন তাকে বিভিন্নভাবে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়া ও উত্যক্ত করা শুরু করেন। চাকরির কথা চিন্তা করে এতদিন সহ্য করছিলেন তিনি। চলতি বছরের ৮ মে বিকেলে মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে তাকে দাওয়াত দেন শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন। দাওয়াত পেয়ে তিনি সন্ধ্যায় আবুল হোসেনের বাসায় যান, কিন্তু ওই মুহূর্তে বাসায় কেউ ছিল না। সুযোগ পেয়ে তাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে হাত দেন আবুল হোসেন। ওই সময় তিনি চিৎকার করতে চাইলে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কোনোরকমে সেদিন পালিয়ে নিজের বাসায় চলে আসেন ওই শিক্ষিকা। এরপর ছেলে ও স্বামীকে পুরো ঘটনা জানান।
স্বামী ও ছেলের পরামর্শে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেনের অপকর্মের কথা হাজী আব্দুল কুদ্দুস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটিকে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষিকা। এতে কোনো সুরাহা হয়নি, উল্টো তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকার পরামর্শ দেন কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাহেদুল ইসলাম। নিরুপায় হয়ে স্বামী ও ছেলেকে সাক্ষী রেখে আদালতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষিকা।
রোববার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করার পর বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জানতে আশুগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পিবিআই-এর এসপি মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসাইন বলেন, মামলাটি স্পর্শকাতর। আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সুষ্ঠু তদন্ত করব।