প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ৭:১৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
যৌতুকের জন্য স্বামীর অত্যাচারে দুগ্ধদানকারী এক মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আছমা খাতুন (২২)। তার তিন মাস বয়সী এক পুত্রসন্তান রয়েছে। অবুঝ শিশুটি দুধ খাওয়ার জন্য বারবার মাকে খুঁজছে। এমনই এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখা গেল হাসপাতাল চত্বরে। সোমবার (১৬ নভেম্বর) মাগুরায় সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্বামী মহব্বত আলীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের চাচাতো ভাই মো. ফরিদ শেখ বলেন, ‘প্রায় পনের মাস আগে সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের নূরালী মোল্যার ছেলে মহব্বত আলী মোল্যার সঙ্গে তার চাচাতো বোন আছমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী মহব্বত আলী আছমা খাতুনকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। পাঁচ মাস আগে সুদের ওপর দুই লাখ টাকা নিয়ে জামাইয়ের হাতে তুলে দেন আসমার বাবা। তাতেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি স্বামী মহব্বত আলীর। নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলে। এরমধ্যে তিন মাস আগে আছমা একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।’
তিনি বলেন, ‘পুত্রের বয়স এখন তিন মাস। তারপরও স্বামীর অত্যাচার বন্ধ হয়নি। গত শুক্রবার মহব্বত আলীর স্বজনরা আছমা খাতুনের বাড়িতে মোবাইল করে জানান, তাদের মেয়ে (আছমা) খুব অসুস্থ। অসুস্থতার খবর পেয়ে আছমার মা ছায়রা খাতুন ছুটে যান মেয়ের বাড়িতে। শনিবার (১৪ নভেম্বর) তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাতে তার মৃত্যু হয়।’
বিষয়টি আছমার চাচা ইউসুফ আলী আজ পুলিশকে জানালে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে স্বামী মহব্বত আলী ও তার বাবা নূরালী মোল্যাকে আটক করে।
এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পারভেজ বলেন, ‘পুলিশ খবর পেয়েই অভিযুক্ত স্বামী মহব্বত আলী ও তার বাবা নূরালী মোল্যাকে আটক করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিশুটি বর্তমানে তার নানির হেফাজতে রয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
নিহতের মা ছায়রা খাতুন বলেন, ‘একদিকে তার মেয়ের মৃত্যুর শোক অন্যদিকে তার নাতির মা হারানোর কান্নাকাটি তিনি সইতে পারছেন না। তিন মাসের শিশুপুত্রটি দুধ খাওয়ার জন্য বারবার মাকে খুঁজছে। এই দৃশ্য তারা কেউ সইতে পারছেন না।’ বর্তমানে শিশুটিকে সুজি রান্না করে খাওয়ানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।