প্রকাশ: সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ২:২১ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরোহাটহাজারী মাদরাসায় হেফাজতে ইসলামের কাউন্সিল শেষে যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তা ‘অবৈধ’ বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর অনুসারীরা। তবে এখনই পাল্টা কোনো কমিটির দিকে তারা যাচ্ছেন না। তারা বলেছেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আহমদ শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতের আমির পদটি শূন্য হয়। সে জন্য রোববার হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম মাদরাসায় সম্মেলন ডাকা হলেও তাতে আমন্ত্রণ পাননি শফী সমর্থকদের অনেকে। কাউন্সিল শেষে নতুন কমিটিতে আমির হিসেবে জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মহাসচিব হিসেবে নূর হোসেইন কাসেমীর নাম ঘোষণা করা হয়।
আহমদ শফী যখন আমির ছিলেন, তখন তার ছাত্র জুনাইদ বাবুনগরী ছিলেন মহাসচিব আর ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক নূর হোসাইন কাসেমী ছিলেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির। সেই কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহী এবং আহমদ শফীর ছেলে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানি রোববার ঘোষিত কমিটিতে কোনো পদ পাননি। এ বছরের মাঝামাঝিতে শফীর ছেলে আনাস মাদানির সঙ্গে দ্বন্দ্বে মাদরাসার পদ হারান বাবুনগরী, তবে হেফাজতের মহাসচিবের পদে থেকে যান। ওই ঘটনার জের ধরে এক দল মাদরাসা শিক্ষার্থীর বিক্ষোভের মুখে মাদরাসার মহাপরিচালকে পদ ছাড়েন আহমদ শফী; তার ছেলে আনাস মাদানিকেও বরখাস্ত করা হয়। এরপর বাবুনগরী আবার মাদরাসার পদে ফেরেন।
হাটহাজারী মাদরাসার কর্তৃত্ব হারানোর পরদিনই আহমদ শফী মারা যান। এর ফলে আমিরের শূন্যপদ পূরণে বাবুনগরীরা সক্রিয় হয়ে ওঠার পর থেকে তার বিরোধিতা করছেন শফীর অনুসারীরা। গতকাল নতুন কমিঠি ঘোষণার পর মঈনুদ্দীন রুহী বলেন, ‘এই কমিটি অবৈধ। আমরা এটা প্রত্যাখ্যান করি। এই কাউন্সিলের যিনি আহ্বায়ক, সেই মহিবুল্লাহ বাবুনগরীর হেফাজতে ইসলামে সদস্য পদও নেই। এরকম একজন ব্যক্তি কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করতে পারেন না।’
মঈনুদ্দীন রুহীর দাবি, রোববার হাটহাজারী মাদরাসায় হওয়া কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে থাকা ৬৫ জনই উপস্থিত ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এখন ঢাকায় আছি। সিনিয়র নেতাদের সাথে বৈঠকে বসেছি। যেহেতু গঠনতান্ত্রিকভাবে কাউন্সিল বা সিদ্ধান্ত হয়নি, তাই এর সবই অবৈধ।’ নিজেদের পরবর্তী পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিব। সময়ই বলবে আমরা কী করব। সেই সিদ্ধান্ত আপনাদের জানাব।’ গত শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে রুহী দাবি করেছিলেন, আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল, আর তা ছিল ‘জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্র’।
মঈন উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। একতরফাভাবে তারা কাউন্সিল করেছে। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছাত্র, গুণগ্রাহী এবং অনুসারীরা সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। তাদের সাথে আলোচনা করে যা করা দরকার সেটা করা হবে।’