বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করতেই বাইডেনের দ্বি-দলীয় সরকার
প্রকাশ: সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ২:২১ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

 
কামাল সিদ্দিকী

জর্জ ওয়াশিংটন যখন আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তখন তিনি তার মন্ত্রীসভায় দুজন বিপরীতমুখী ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। লক্ষ্য নতুন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সদ্য স্বাধীন আমেরিকার স্বাধীনতা যেন অভ্যন্তরীন কোন্দলে ক্ষুণœ না হয় তারই আগাম সর্তকতা হিসাবে তিনি এই নীতি গ্রহণ করেন। তার এই পদক্ষেপ পরবর্তীতে দারুন প্রশংসিত হয়। এমনকি তিনি তার এই দুই বিরোধীদের সমর্থন লাভে সমর্থ হন। তাইতো দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে তাকে যখন তৃতীয় মেয়াদের জন্য জোরাজুরি করা হয়, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘ঈশ^রকে ধন্যবাদ, আমি এখনো কর্মক্ষম এবং স্বাস্থ্যবান আছি। শুধু সে কারণে আমি এ পদ চাইনা, এটা শুধু অযোক্তিক নয়, অপরাধ হবে, যদি আমি এ পদ আঁকড়ে থাকি। হয়তো অপর কেউ আমার চেয়েও আরও ভালোভাবে তার দায়িত্ব পালন করবেন।’ এভাবেই নতুন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা ওয়াশিংটন তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে নিশব্দে বিদায় নেন। আবার টমাস জেফারসন যিনি তার সমাধি ক্ষেত্রে লিখেছিলেন, এখানে শায়িত আছেন টমাস জেফারসন। যিনি আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণার সনদের ধর্মীয় স্বাধীনতান জন্য ভার্জিনিয়া আইনের রচয়িতা,ও ভার্জিনিয়া বিশ^বিদ্যালয়ের জনক। তিনি যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন সেটা তার কাছে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই ছিল না।
প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন। যিনি নির্বাচিত হয়ে প্রথম জনসম্মুখে ভাষণ দিতে দাঁড়িয়েছেন। তখন এক আমেরিকান হঠাৎ উঠে দাড়িয়ে বললেন, তুমি লিঙ্কন? তোমার বাবা আমাদের পরিবারের চর্মকার ছিল। তার ছেলে তুমি! জাতির কি দুর্ভাগ্য তোমাকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত করেছে। কিন্তু আমি তোমাকে প্রেসিডেন্ট মানি না। তুমি চর্মকারের ছেলে, যে কিনা আমাদের পরিবারের জুতা তৈরি করত? উপস্থিত সকলে থ মেরে গেল। অনেকেই উত্তেজিত হয়ে উঠলেন। কিন্তু লিঙ্কন ভাবলেশহীন। সকলকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, আপনাকে ধন্যবাদ, আপনি যথার্থ বলেছেন। আমার বাবা একজন সৎ ও দেশপ্রেমিক মুচি ছিলেন। তিনি তার কাজকে দেশপ্রেমের মত শ্রদ্ধা করতেন। মহাশয় যদি এখনও আপনার জুতার কোন প্রয়োজন হয় আমাকে বলবেন আমি নিঃসংকোচে তা তৈরি করে দেব।’ যুক্তরাষ্ট্র বিশে^র সেরা শক্তি। সম্পদে রাজনীতিতে দেশটি সারা বিশে^র মোড়ল। একসময় তাদের প্রবল প্রতিদ্বন্দী কমিউনিস্ট শক্তিকে পরাজিত করে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। এমনকি অজেয় এবং অদ্বিতীয় শক্তি হিসাবে প্রবল প্রতাপে বিশ^কে শাসন করে আসছে। নতুন রাষ্ট্রের সেই প্রথম পেসিডেন্টের যুগন্তকারী পদক্ষেপই আজকের আমেরিকার জন্ম দিয়েছে।
আগের তিন প্রেসিডেন্টের উদাহরণ টানার কারণ, ২০২০ সালের নির্বাচনে আমেরিকার ক্ষমতার অলিন্দে যে পাশা খেলা শুরু হয়েছে তাতে অনেকটা শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ৩ নভেম্বর নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভরাডুবি ঘটে। কেবল পপুলার ভোটেই নয় ইলেকটোরাল ভোটে ট্রাম্প ধরাশায়ী। তারপরেও তিনি নিজের পরাজয় মেনে নিতে চাচ্ছেন না। উপরন্ত  ক্ষমতা ধরে রাখতে আদালতের দরজায় হাটছেন। তার এই কর্মকা- বস্তূত আমেরিকাকে বিভক্ত করে দিয়েছে। গত শনিবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্প তার স্বপক্ষে লাখ খানেক লোকের জমায়েত ঘটিয়ে এই বার্তা দিলেন, তিনি কোনভাবেই জনগণের ম্যান্ডেটের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন না। দৃশ্যত, আমেরিকা চরম ক্রান্তিকাল পার করছে।  
এদিকে ভিন্ন পথে হাটছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জো বাইডেন তার প্রথম ভাষণে ঐক্যবদ্ধ আমেরিকার যে কথা বলেছিলেন সে পথে তিনি ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছেন। আমেরিকার গণমাধ্যম তাদের প্রকাশিত সংবাদে তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। দীর্ঘকাল পর আমেরিকা দ্বি-দলীয় সরকার গঠনের দিকে অনেকটাই এগিয়েছেন বাইডেন। বিভক্ত আমেরিকাকে এক সূত্রে গাথা এখন তার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। তিনি সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চান। বর্তমান সময়ে আমেরিকার ভঙ্গুর অর্থনীতি যেমন তাদের কপালে চিন্তার ভাজ ফেলেছে, তেমনি মহামারি করোনা তাদের দেশকে ল-ভ- করে দিচ্ছে। এপর্যন্ত বিশে^ করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে আমেরিকা। আবার সেখানে যেমন আক্রান্তের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়েছে তেমনি মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক। এপর্যন্ত মৃতের  সংখ্যা তিন লাখের ঘরে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই করোনাকে কেবল উপেক্ষাই করেননি এনিয়ে নানা সময় তিনি কৌতুকও করেছেন। বেশিরভাগ সময় একে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে উপহাস করেছেন। আক্রমণের প্রথম দিকে তিনি কোন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেননি। এমনকি মাস্ক পরা নিয়ে বিভিন্ন ভাবে কৌতুক করেছেন। এই সময়ে এসেও তিনি তার সেই অবস্থান বদলাননি। গত শনিবার লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটিয়ে প্রকারন্তে তিনি করোনাকে আমন্ত্রণ জানালেন। ট্রাম্প নিজে যা করতে চাচ্ছন সেটি রিপাবলিকানদের জন্য কতটা সুফল বয়ে আনবে তানিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। তবে বাইডেন রিপাবলিকানদের সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন বলেই দ্বি-দলীয় সরকার প্রবর্তনে অনেকটা ত্যাগ স্বিকারে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। বাইডেনের প্রথম ভাষণের সেই কথাগুলো ‘আমি আমেরিকাকে একসূত্রে গাথতে চাই। ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা যে তার হারানো গৌরবকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে।’ সেক্ষত্রে বাইডেনের দ্বি-দলীয় তত্বটি কতটা কার্যকর হয় সেটিই এখন দেখার বিষয়।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]