প্রকাশ: সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ১:৩৩ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
কিছুতেই জনগণের ম্যান্ডেট মেনে নিতে চাইছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এজন্য নিজে অর্থ খরচ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তার সমর্থকদের হাজির করছেন রাজধানী ওয়াশিংটনে। এই সব সমর্থকদের মুখে একটিই স্লোগান উই ওয়ান্ট ট্রাম্প। গত শনিবার লাখখানেক সমর্থকদের জড়ো করে ট্রাম্প তার অনাস্থার জানান দিলেন। জমায়েত অবশ্য তার আশাপুরণ করতে পারেনি। কারণ তিনি কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতি প্রত্যাশা করেছিলেন, সেই মোতাবেক তিনি প্রয়োজনীয় অর্থ ও দিক নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। সেখানে সব মিলিয়ে লাখ খানেক বা তার কম লোকের সমাবেশ ঘটে। যদিও তার এই কর্মকা- মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য বিরাট হুমকী বলে মনে করছেন দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যাদের ভিতরে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ক্লিনটন রয়েছেন। এতদিন তৃতীয় বিশে^র দেশে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে এই ধরনের অস্থিরতা দেখা গেছে। তখন মার্কিন প্রশাসন সেসব অস্থিরতা দুর করতে দ্যুতিয়ালি করেছে। এমনকি গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিতে নিজেদের মরুব্বিগীরি দেখাতে পদক্ষেপ নিয়েছে। সারা বিশে^র কাছে মার্কিন গণতন্ত্র একটি মডেল হিসাবে দাড় করিয়ে তারা তৃতীয় বিশে^র দেশকে ছবক দিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প যামানায় তাদের সেই অহঙ্কার অনেকটাই ধুলোয় মিশে যাচ্ছে বলেই চলমান ঘটনা থেকে স্পষ্ট হচ্ছে। বলা যেতে পারে জনগণের ম্যান্ডেটের প্রতি সম্মান দেখানোর চিরায়িত সংস্কৃতি থেকে মার্কিন রাজনীতিবিদেরা বর্তমানে বের হয়ে এসেছেন। ট্রাম্পের নির্বাচনে হারার পর থেকে তার গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপ যা জনগণের ইচ্ছের পরিপন্থি হিসাবেই কাজ করছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম মার্কিন গণতন্ত্র যে ঝুঁকির মধ্যে সে বিষয়ে নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে। কোন প্রমাণ ছাড়াই রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে বলে ক্রমাগতভাবে অভিযোগ করে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের এই বায়বীয় অভিযোগের সমর্থনে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির কেন্দ্রস্থলে সমাবেশ করেছে তার লাখো সমর্থক।গত শনিবার এ সমাবেশের পাশ দিয়ে ট্রাম্পের গাড়িবহর যাওয়ার সময় তার সমর্থকরা ব্যাপক উল্লাস প্রকাশ করেছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট অ্যাগেইন’ স্লোগান লেখা লাল বেসবল ক্যাপ পরা প্রেসিডেন্টকে দেখতে পেয়ে এ সময় বিক্ষোভকারীরা উল্লসিত হয়ে ওঠে। ট্রাম্পকেও তার প্রেসিডেন্সিয়াল লিমুজিন থেকে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়তে দেখা যায়।‘তারা কারচুপি ও দুর্নীতির নির্বাচনের পক্ষে নেই,’ পরে টুইটারে লেখেন ট্রাম্প।এদিন লাখ লাখ মানুষ তার অভিযোগের পক্ষে ওয়াশিংটনের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়েছে বলে ট্রাম্প দাবি করলেও সমাবেশে উপস্থিত লোকের সংখ্যার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সমাবেশে ট্রাম্প যা আশা করেছিলেন, তার চেয়ে অনেক কম লোক হয়েছে।এ সমাবেশে যোগ দিতে ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচ থেকে ওয়াশিংটনে আসা ডনাল্ড টারসা জুনিয়র বলেছেন, ‘আমার মনে হয়েছে এই নির্বাচনে অনেক জায়গায় কারচুপি হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমও অনেক পক্ষপাতিত্ব করেছে, তারা লাখ লাখ নাগরিককে বাইডেনের পক্ষে ভোট দিতে উৎসাহিত করেছে। ট্রাম্পকে ঘৃণা করে তারা।’এ সমাবেশে কট্টর ডানপন্থি প্রাউড বয়েজ গোষ্ঠীর অনেক সদস্যকেও দেখা গেছে; তাদের বেশিরভাগেরই পরনে ছিল কালো পোশাক। তাদের কারও কারও মাথায় হেলমেট ছিল, অনেকের গায়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেটও ছিল।
একই দিন ওয়াশিংটনে সুপ্রিম কোর্টের কাছে বাম ঘরানার কিছু গোষ্ঠীও পাল্টা ছোট ছোট কর্মসূচি পালন করেছে; এসব কর্মসূচিতে কট্টরপন্থি হিসেবে পরিচিত এন্টিফার সদস্যদেরও দেখা গেছে।এদিন বিকাল পর্যন্ত ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্রের আইন লংঘন, হামলা এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে পুলিশের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন।