টেকনাফে আমন মৌসুমে ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকার ১০হাজার ৮শ ১৫হেক্টর জমির বিভিন্ন প্রজাতির ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষি অফিসের ধারণা গত বছরের চেয়ে তুলনামূলকভাবে এই বছর ফলন একটু ভাল হয়েছে।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি বছর টেকনাফ উপজেলায় হোয়াইক্যংয়ে ৬হাজার ১শ ৬০হেক্টর, হ্নীলায় ১হাজার ৪শ ৫৫হেক্টর, টেকনাফ সদরে ১হাজার ৩শ ৩০হেক্টর, সাবরাংয়ে ৭শ ৪০হেক্টর, বাহারছড়ায় ১হাজার ৬ হেক্টর, সেন্টমার্টিনে ৬৫হেক্টর ও পৌর এলাকায় ৫হেক্টরসহ মোট ১০হাজার ৮শ ১৫ হেক্টর জমির মধ্যে ৫০হেক্টর জমিতে এরাইজগোল্ড হাইব্রীড, ১৬০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় বিন্নি, লেম্বুর, নুনাস, কালাম পায়জাম, ১০হাজার ৬শ ৫হেক্টর জমিতে উফসি প্রজাতির বি আর ১০, ব্রিধান ৩৩, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪৯, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৫৬, ৭২, ৭৬, ৮০, ৮৭, বিনা ৭, ১০, ১৭, ২০, পায়জাম ও হরিধানের চাষাবাদ করা হয়। ঢালু ও উঁচু স্থানের ধান আগাম পাঁকা হয়ে পড়েছে। তুলনামূলক নিম্মাঞ্চলের ধান এখনো পরিপূর্ণ পাঁকা হয়নি। তবুও হোয়াইক্যং, হ্নীলা, বাহারছড়া ও সাবরাং এলাকার কয়েকটি স্থানে কৃষকেরা ধান কাটতে শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গত বছর প্রতি হেক্টরে ধানের ফলন ছিল ৩.৫ মেট্রিকটন আর চলতি বছরের সম্ভাব্য ফলন ধরা হয়েছে ৩.৬ মেট্রিকটন। এর কারণ হিসেবে আবহাওয়ার তেমন বিরূপ প্রভাব না থাকা, উপজেলা কৃষি অফিসের ইউনিয়ন ভিত্তিক উপসহকারী কৃষি অফিসারদের তদারকি,পরামর্শ ও সহায়তায় এবং কৃষকদের আগ্রহের কারণে এসব ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে।
এই ব্যাপারে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ সিকদার জানান, তিনি ১১কানি জমিতে ধান চাষ করেছেন। সম্প্রতি বয়ে যাওয়ার বৃষ্টির কারণে মৎস্যঘেঁর এলাকায় ধানের ফলন গত বছরের তুলনায় ভাল হয়েছে।
লাতুরী খোলার নুর আলমের পুত্র নুরুল হোছাইন বলেন,আমি ৪কানিতে চাষ করেছি। ধান খুব ভাল হয়েছিল কিন্তু বৃষ্টির কারণে বেশ কিছু ধান পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।হ্নীলা বড় লেচুয়াপ্রাংয়ের কৃষক রফিকুল ইসলাম মুন্সী বলেন, তাদের পরিবারে ২০/২৫ কানি জমিনে ধানের চাষ হয়েছে। ফলনও খুব ভাল হয়েছে কিন্তু কিছু দিন আগে বয়ে যাওয়া ঝড়-বৃষ্টির কারণে কিছু পড়ে নষ্ট হয়েছে।
রঙ্গিখালী জুম্মাপাড়ার মৃত সোলতান আহমদের পুত্র শামসুল আলম বলেন, আমি ১০কানি জমিতে চাষ করেছি। ইনশল্লাহ খুব ভাল ফলন হয়েছে।
টেকনাফ সদরের জাহালিয়া পাড়ার মোহাম্মদ মামুন বলেন, চলতি বছর আমি ২২কানি জমিতে ধান চাষ করেছি। ফলন খুক ভাল হলেও কিছুদিন পূর্বের ঝড়ো বাতাস এবং বৃষ্টিতে মাঠের বেশ কিছু ধান পড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বাহারছড়া শাপলাপুরের রহমান উল্লাহ বলেন, ৩কানি জমিতে খোরাকের চাষ করেছি। চাষ ভাল হয়েছে কিন্তু বাতাসে কিছুটা পড়ে গেছে।একই এলাকার আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি ৬ কানি জমিতে চাষ করেছি। ইনশল্লাহ ভাল ফলন হয়েছে।হ্নীলা পূর্ব পানখালীর মৃত আবু শামার পুত্র খলিল আহমদ বলেন, আমি ২৫ কানি জমিতে ৩৯, পায়জাম, বিন্নি ধানের চাষ করেছি। ফলন খুব ভাল হয়েছিল কিন্তু বৃষ্টি ও বাতাসে কিছুটা নষ্ট হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. ভবসিন্ধু রায় জানান,টেকনাফ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সকল উপসহকারী কৃষি অফিসারগন, প্রযুক্তি ও নতুন নতুন জাত কৃষকদের কাছে পৌছে দিয়ে কৃষকের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়েছেন। সার কীটনাশক পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় চাষে কোন অসুবিধা হয় নাই। উপরোক্ত কারনে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা কৃষক লীগের দপ্তর সম্পাদক, হোসাইন আল মাসুম বলেন,"জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা মুক্ত সোনার বাংলা গড়তে জেলার কৃষি উন্নয়নের জোরালো ভূমিকা রাখার প্রত্যয়ে আরো বেশি বেশি ধান চাষে বিনামূল্যে কৃষকদের বীজ সরবরাহ,সার জৈবসারসহ কৃষি জমি সুরক্ষার জন্য কাজ করে যাবো পাশাপাশি কৃষকদের সবধরনের সহায়তা করবো"