প্রকাশ: রোববার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ৬:৩৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সম্প্রতি আলু চাষে ফলন এবং দাম দুটোই ভালো পাওয়ায় ও লাভবান হওয়ার স্বপ্নে আলু রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার কৃষকরা। সম্প্রতি বাজারে আলুর দাম চড়া হওয়ায় রোপা আমন ধান ঘরে তোলার পর কৃষকরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। এ অঞ্চলের মাটি আলু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় তুলনা মূলক অধিক জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের আলু চাষ করা হয়। তাই মৌসুমের প্রথম দিকে আগাম জাতের আলু উৎপন্ন হলে ভালো দাম ও অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবেন এমনটাই আশা করছেন কৃষকরা। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কোন পরামর্শ দেয়া হয় না এমন অভিযোগ রয়েছে উপজেলা বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের।
আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু, সরিষা- ১৬শ হেক্টর, গম- ২৫ হেক্টর, মরিচ- ৩০ হেক্টর, পিয়াজ- ২৫ হেক্টর ও মসুর ডাল- ১০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং আলু সহ সব ধরনের সবজির দাম ভালো পাওয়ায় এলাকায় কৃষকরা আলু সহ বিভিন্ন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এবার সংরক্ষিত আলু বীজেরও দাম আকাশ ছোঁয়া হওয়ায় বাজার থেকে ক্রয় করা বীজ নিয়ে আলু রোপণ করছে। কৃষকরা যেসব জাতের আলুর বীজ রোপণ করছে তার মধ্যে ডায়মন্ড, লাল পাকড়ি, কাডিনাল, ফাঁটা পাকড়ি ও গ্যানোলা আলু বীজ রয়েছে। আলু চাষের জন্য কার্তিক মাসের শেষ ভাগ থেকে অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত উপযুক্ত সময়। উচ্চ ফলন পাওয়ার আশায় চাষীরা উন্নত মানের বীজ সংগ্রহ, সুষম মাত্রার রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করা সহ প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আলু চাষের জন্য কেউ জমি প্রস্তুত করছেন। আবার কেউ আলু বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় কথা হয় সদর ইউনিয়নের জিনইর গ্রামের আলু চাষী আবুল কালাম, কোমারভোগ চকসোনার গ্রামের আলু চাষী মোজাম্মেল হক সহ একাধিক আলু চাষির সঙ্গে তারা জানান, আগাম জাতের এ সব আলু দুই মাসের মাথায় উঠবে। আর প্রথমের দিকে আলু উঠলে বাজারে দাম ভালো পাওয়া যায়। তবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আলু চাষীরা আক্ষেপ করে বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদের তেমন কোন পরামর্শ বা সহায়তা দেয়া হয় না। আর পরামর্শ না পাওয়ার কারণে অনেক সময় আমাদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এমন নানা অভিযোগ করেছেন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা।
এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, চলতি মৌসুমে আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর থেকে কৃষকরা জমিতে আলু ও সরিষা রোপন শুরু করেছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলু, সরিষা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।