হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নতুন আমির নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী।
রোববার (১৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রারাসায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সারাদেশের কাউন্সিলরদের ভোটে আমির ও মহাসচিব নির্বাচিত হন।
এর আগে সকাল ১০টায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় সম্মেলন শুরু হয়। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর কে হচ্ছেন আমির তা নিয়ে ছিল আলেম-ওলামাদের মধ্যে সরব আলোচনা। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছিল, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আমির এবং আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী মহাসচিব হতে পারেন।
সারাদেশে সংগঠনের জেলা প্রতিনিধিসহ প্রায় পাঁচশ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল হেফাজতে ইসলামের সম্মেলনে। তবে নতুন কমিটি গঠন হয়েছে জ্যেষ্ঠ আলেমদের ১৫ জনের শুরা কমিটির সিদ্ধান্তে।
প্রতিনিধি সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের নায়েবে আমির নাজিরহাট আল জামিয়া আল আরাবিয়া নছিরুল ইসলাম মাদ্রাসার শুরা সদস্য ও ফটিকছড়ি বাবুনগর মাদ্রাসার মুহতামিম মহিবুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীর মামা।
যেখানে এই সম্মেলন হয়েছে, হাটহাজারীর সেই আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মুহতামিম বা পরিচালক ছিলেন হেফাজত আমির শাহ আহমদ শফী। গত ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়ার আগের দিন তিনি অভ্যন্তরী কোন্দলে মাদ্রসার কর্তৃত্ব হারান।
আহমদ শফীর অনুসারীদের অভিযোগ, হেফাজতের সম্মেলনে তাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, হেফাজতে ইসলামের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের এই সম্মেলনের ‘বৈধতা নেই’।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে ‘শফী হুজুরের হাতে গড়া অরাজনৈতিক কওমী সংগঠন’ হেফাজতে ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে ‘জামায়াত-শিবির, বিএনপির হাতে’ তুলে দেওয়া হচ্ছে বলেও গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন শফীর ছোট শ্যালক মো. মঈন উদ্দিন।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর পর তার বিরোধিতায় নেমে আলোচনায় উঠে আসে হেফাজতে ইসলাম। তার আগেই গঠিত এই সংগঠনের আমিরের পদে ছিলেন আহমদ শফী।
শফীর বয়স হওয়ায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় তার উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে তার অনুসারী এবং বাবুনগরীর অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয় চলতি বছর।
মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম বা সহকারী পরিচালকের পদে থাকা জুনাইদ বাবুনগরী ছিলেন মাদ্রাসাটির শীর্ষ পদের অন্যতম দাবিদার। কিন্তু শফীর ছেলে আনাস মাদানির সঙ্গে তার দ্বন্দ্বে মাদ্রাসায় অস্থিরতা দেখা দেয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমীর ও দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি।