প্রকাশ: রোববার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ৩:৩৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
হেফাজতে ইসলামের নতুন আমির হয়েছেন মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী। তিনি সংগঠনটির সাবেক মহাসচিব। আর নতুন মহাসচিব করা হয়েছে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীকে।
রবিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে এই নতুন কমিটি করা হয়।
১৫১ সদস্যের নতুন কমিটিতে সাবেক আমির আল্লামা শফীর ছেলে আনাস মাদানীসহ তার অনুসারী কারও নাম নেই বলে জানা গেছে।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালে আলোচিত সংগঠনটির আমির পদ শূন্য হয়। তার মৃত্যুর দুই মাস পর উত্তরসূরি নির্বাচন করা হলেও নতুন কমিটিতে স্থান পাননি আল্লামা শফীপন্থীরা। তারা হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটি ঘোষণা করতে পারেন বলে জানা গেছে।
গতকাল চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন আল্লামা শফীপন্থীরা। বাবুনগরীর ডাকা সম্মেলনকে অবৈধ আখ্যায়িত করে একতরফা কমিটি ঘোষণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। অন্যথায় তারা যেকোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
হেফাজতে ইসলাম ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও ব্যাপক আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে। কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ থেকে মহানবী ও ইসলামের বিভিন্ন অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই বছরের ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করে হেফাজতে ইসলাম। তবে এর এক মাস পর ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে শাপলা চত্বরে বিপর্যয়ের পর হেফাজতে ইসলাম অনেকটা কোণঠাসা হয়ে যায়। যদিও পরবর্তী সময়ে সরকারের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তী সময়ে বড় কোনো কর্মসূচি নিয়ে হেফাজতকে মাঠে নামতে দেখা যায়নি।
কয়েক বছর ধরে হেফাজতে ইসলামে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চলে আসছে। সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক ও আল্লামা শফীপুত্র আনাস মাদানীকেন্দ্রিক একটি বলয় গড়ে উঠে, যারা বাবুনগরীকে অনেকটা কোণঠাসা করে রাখেন। তবে ইন্তেকালের দুই দিন আগে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ছাত্রদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে আল্লামা শফী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। নিজ স্বাক্ষরে বহিষ্কার করেন ছেলে আনাস মাদানীকে। এরপর থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় বাবুনগরী বলয়ের একচ্ছত্র প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এবার হেফাজতে ইসলামেও বাবুনগরীর একচ্ছত্র প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হলো। তবে ধর্মীয় ও অরাজনৈতিক এই সংগঠনটির ভাঙন শেষ পর্যন্ত ঠেকানো যাবে কি না সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।