প্রকাশ: শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৩ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের পাতা ডেস্ক
নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত জীবনের উদ্দেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে একের পর এক নৌকাডুবির ঘটনায় মারা পড়ছে অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষ। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার লিবিয়ার খোম উপকূলে নৌডুবিতে সলিল সমাধি হল ৭৪ শরণার্থীর। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইওএম) এ খবর জানিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রলয়ংকারী ঘটনার সময় নৌকাটিতে ১২০ জনের বেশি মানুষ ছিলেন। লিবিয়ার কোস্টগার্ড ও জেলেরা প্রায় ৪৭ জনকে উদ্ধার করেছে। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে আটটি শরণার্থী বোঝাই নৌকা দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক’শ শরণার্থী।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইউরোপে আশ্রয় নেওয়ার জন্য শরণার্থীদের ঢল নেমেছে। লিবিয়া ও তিউনিশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী পাড়ি জমাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ১২০ জন শরণার্থী নিয়ে একটি নৌকা ইউরোপে পাড়ি জমানোর সময় লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে ১২০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত খোমস নগরীর কাছে আচমকাই নৌকাটি ডুবে যায়। মর্মান্তিক ঘটনায় ৭৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয় মৎস্যজীবী ও উপকূলরক্ষীরা দুর্ঘটনাগ্রস্ত নৌকার যাত্রীদের উদ্ধারে ঝাঁপি পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ঘটনার দুই দিন আগে এক নৌকা উল্টে ১৯ জন শরণার্থী প্রাণ হারিয়েছিলেন। গত সাত বছরে নিশ্চিন্ত জীবনের খোঁজে পাড়ি দিতে গিয়ে ২০ হাজারের বেশি শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে শুধু ২০২০ সালে ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে কমপক্ষে ৯শ মানুষ ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় মারা গেছে।
বিভিন্ন দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী ১১ হাজারের বেশি লিবিয়া শরণার্থীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন। শরণার্থীদের ঢল রুখতে ইতিমধ্যে তুরস্ক সীমান্তে পাঁচিল গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস সরকার। যদিও ইতালিসহ বেশ কয়েকটি দেশ শরণার্থীদের জন্য উপকূল এলাকাতেই বিশেষ শিবির তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার আইওএমর লিবিয়া মিশনের প্রধান ৭৪ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়ে বলেন, ভূমধ্যসাগরে প্রাণহানি বাড়তে থাকা রাষ্ট্রগুলোর উদ্ধারকারী জাহাজ পুনরায় মোতায়েনের অক্ষমতাকেই ইঙ্গিত করে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই সমুদ্র পারাপারে উদ্ধার সক্ষমতা ও তল্লাশি অভিযান জোরালো করা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।